হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে এবার অপমানিত হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। শান্তিপূর্ণ আলোচনার আশায় এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হলেও তা আচমকা বিতর্কে রূপ নেয়। ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘শ্বেতাঙ্গ চাষিদের ওপর গণহত্যা’র মিথ্যা অভিযোগ তুলে চাপ তৈরি করেন।

বুধবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত বৈঠকে রামাফোসা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক মজবুত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে ট্রাম্প এক ভিডিও উপস্থাপনার মাধ্যমে অভিযোগ তোলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের হত্যা করা হচ্ছে এবং সরকার কিছুই করছে না। ভিডিওতে ‘শুট দ্য বোয়ের’ গান বাজানো হয়, যার গায়ক সরকারবিরোধী নেতা জুলিয়াস মালেমা। ভিডিওটি একটি পুরোনো প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হলেও ট্রাম্প তা একটি বাস্তব গণকবর হিসেবে উপস্থাপন করেন।

 

রামাফোসা পাল্টা জবাবে বলেন, এই বক্তব্য দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটি আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রকাশ। মালেমার দল একটি ছোট বিরোধী দল এবং তাদের এমন বক্তব্য দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণের পক্ষে নয়।

 

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, আপনারা কৃষকদের জমি নিয়ে নিচ্ছেন, তারপর তাদের হত্যা করছেন, আর কেউ কিছু করছে না।

রামাফোসা এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে অপরাধ হয়, কিন্তু নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ। শ্বেতাঙ্গরাও এই দেশেরই নাগরিক। যদি এখানে গণহত্যা হতো, তবে আমার সঙ্গে থাকা এই শ্বেতাঙ্গ প্রতিনিধিরা – এর্নি এলস, রেটিফ গুসেন ও জোহান রুপার্ট – আজ এখানে থাকতেন না।

এদিকে, ওবামা প্রশাসনের সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকা দূত প্যাট্রিক গাসপার্ড এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘পরিকল্পিত অপমান’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

 

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেন। ‘ভূমি উদ্ধার আইন’ পাস করার পর যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকাকে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা স্থগিত করে এবং প্রায় ৬০ জন আফ্রিকানার শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়াশিংটন দূত ইব্রাহিম রাসুল মন্তব্য করেন, ‘ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ উসকে দিচ্ছেন এবং সাদা নিপীড়নের গল্প তৈরি করছেন।’ এই মন্তব্যের জেরে তাকেও মার্চে বহিষ্কার করে ওয়াশিংটন।

এর আগে, গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে অপমানিত হয়েছিলেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।