বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রণীত সাম্প্রতিক আইন মানুষের মৌলিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করার ঝুঁকিতে ফেলেছে বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। গতকাল বুধবার (২১ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১২ মে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি কঠোর সংশোধনীর আওতায় নতুন প্রবর্তিত ক্ষমতা ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ওপর "অস্থায়ী" নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে সভা, প্রকাশনা এবং অনলাইনে দলটির সমর্থনে কথা বলা।
এতে আরো বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকার রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করতে আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। কিন্তু তার দল আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বিরুদ্ধে একই পদ্ধতি ব্যবহার করাও সেই একই মৌলিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন করবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, গুম সংক্রান্ত খসড়া আইনে হাসিনার শাসনামলে রাষ্ট্র কর্তৃক গুম হওয়া শত শত ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে খুব কমই কাজ করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ হতাশাজনক উল্লেখ করে এইচআরডাব্লিউ বলেছে, গত ১৫ বছরের শাসনামলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হওয়ার আগ পর্যন্ত দলটির ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। বিচারের প্রক্রিয়াটি বছরের পর বছর স্থায়ী হতে পারে। এর মাধ্যমে কার্যত দলটিকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হলো। আওয়ামী লীগের যেকোনো ধরণের প্রকাশনা, মিডিয়া, অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, যেকোনো ধরণের প্রচারণা, মিছিল, সভা, সমাবেশ, সম্মেলন ইত্যাদিসহ সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এতে রাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং বিলুপ্ত করে দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ট্রাইব্যুনালকে।
হাসিনা সরকারের অধীনে সংগঠিত অপরাধে অভিযুক্তদের যথাযথ বিচার হওয়া উচিৎ উল্লেখ করে এইচআরডাব্লিউ আরো বলেছে, তবে রাজনৈতিক দলের সমর্থনে দেওয়া যেকোনো বক্তৃতা বা কার্যকলাপের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ মানুষের মৌলিক স্বাধীনতার উপর অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ। এই প্রক্রিয়া বিগত সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর দমনপীড়নেরই প্রতিফলন।