NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
সেই কনস্টেবল পেলেন পিপিএম পদক, দেখা করলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজারবাইজানকে বিনিয়োগের পাশাপাশি মানবসম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান ‘তারা এখন আমাকে সম্মান করেন’—বেজোস ও জাকারবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্প বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক ‘কিং’ শাহরুখের রানি দীপিকা, জমবে কি পুরনো ম্যাজিক মানুষ ভালো সমাধান মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকারকেই-ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমরা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি : শিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের ১৬ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ, বিবিসিকেও সতর্কতা কানাডার নির্বাচনে ফের জয় পেয়েছে লিবারেল পার্টি ইরেশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বাঁধনসহ তারকাদের প্রতিবাদ
Logo
logo

বোমার ভয়ের চেয়েও ক্ষুধায় কাতর গাজাবাসী


খবর   প্রকাশিত:  ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ০৯:০৪ এএম

বোমার ভয়ের চেয়েও ক্ষুধায় কাতর গাজাবাসী

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও অবরোধে দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে মানবিক সংকট। এখন ক্ষুধাই হয়ে উঠেছে সবচেয়ে ‘বড় অস্ত্র’। ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের চেয়েও বেশি আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে অনাহার। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনিদের এমনই দুঃসহ জীবনের করুণ চিত্র উঠে এসেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ঘোষণার পর ২ মার্চ থেকে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা নিষিদ্ধ। এর ফলে খাদ্য, ওষুধ, পানি ও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় লাখো মানুষ মৃত্যুর মুখে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১৪০০ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে বেঁচে থাকার ন্যূনতম জিনিসও এখন অনেকের নাগালের বাইরে।

 

অক্সফামের জরিপ বলছে, গাজায় শিশুদের একটি বড় অংশ দিনে একবেলারও কম খাবার পাচ্ছে। অনেক বাবা-মা নিজের খাবার ত্যাগ করে সন্তানদের খাওয়াচ্ছেন, নিজেরা অভুক্ত থাকছেন।

যু্দ্ধবিরতির সময় যে খাদ্য সহায়তা এসেছিল তা প্রায় শেষ। উদভ্রান্তের মতো ত্রাণ দেওয়া তাঁবুগুলোতে খালি হাঁড়ি নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন গাজার মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক তথ্যমতে, যুদ্ধের সময় বাজারগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এক হাজার ৪০০ শতাংশ।

 

৪৪ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিকমাত আল মাসরি বলেন, আমি প্রায়ই আমার নিজের খাবার থেকে ছেলেকে ভাগ দিই। এই ক্ষুধাতেই আমি মারা যাবো- ধীরে ধীরে এই অনাহার আমাকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দুঃখ দুর্দশার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না, মৃত্যু আমাদের চারপাশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে।

এদিকে, গাজার হাসপাতালগুলোও চরম সংকটে। চিকিৎসাসামগ্রী ও জ্বালানি ঘাটতির কারণে অনেক সময় রোগী ভর্তি বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। দেইর আল বালাহর চিকিৎসাকর্মী আমান্দে বাজেরোল জানান, বার্ন ক্লিনিকগুলোতে দিনপ্রতি ১০ জনের বেশি রোগী নেওয়া হচ্ছে না, কারণ ঔষধ শেষ হয়ে আসছে।

গত ১৮ মার্চ একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজার ওপর পুনরায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের কাছে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে বারবার জানিয়ে আসছে ইসরায়েলের অনেক রাজনীতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।

 

ইসরায়েলের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে গাজায় এই অবরোধ দিয়েছেন তারা, ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছেনা। এই দাবির বিপরীতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অভিযোগ, মানবিক সহায়তা ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হচ্ছে, যা যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার ৭০ শতাংশ ভূখণ্ড বর্তমানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। নিরাপত্তা বাফার জোন তৈরির নামে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে ভূমি দখলের আশঙ্কা দিনে দিনে প্রবল হচ্ছে।

যদিও মধ্যস্ততাকারী দেশগুলো যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে হামাস নিরস্ত্রীকরণ ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে কোনো পক্ষই আপস করতে রাজি নয়। ফলে মানবিক বিপর্যয় আরও ঘনীভূত হচ্ছে।