কেন্দ্রীয় নেতারা সবাই গাঢাকা দিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটেই আজ বৃহস্পতিবার সকালে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
কোটা সংস্কার দিয়ে শুরু করে সরকার পতনের আন্দোলন চালানো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেছেন, এর ফলে নিজেদের কর্মসূচিতে হামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকার মঙ্গলবার এক বৈঠকে জাতীয় শোক দিবসের সরকারি ছুটি বাতিল করেছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মেদ হোসেন বলেছেন, ‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। এই শোক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে শক্তি জোগায়। ১৫ আগস্ট নিয়ে নির্দেশনা দেওয়ার কিছু নেই। যারা স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী তাঁরা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেনই। আওয়ামী লীগ ও সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে শ্রদ্ধা জানাবেন। মিলাদ ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচি পালন করবেন।’
সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মেদ হোসেন আরো বলেন, এখন পরীক্ষা দেওয়ার সময়। যাঁরা আওয়ামী লীগের খাঁটি কর্মী তাঁরা শ্রদ্ধা জানাবেন। যাঁরা নকল (অনুপ্রবেশকারী) তাঁরা আসবেন না। এখনই আওয়ামী লীগের প্রকৃত কর্মী হিসেবে প্রমাণ করার সুযোগ।
আজ আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আছে—সূর্যোদয়ের মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং সারা দেশে দলের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল ৮টায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। একই স্থানে সকাল সাড়ে ৮টায় মিলাদ মাহফিল। সকাল ৯টায় কলাবাগান মাঠ থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত মৌন মিছিল। সকাল ১০টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন। ১২টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বাদ জোহর দেশব্যাপী মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের প্রায় সব সদস্যকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল ও শেখ জামাল এবং তাঁদের স্ত্রী, শিশুপুত্র শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসেরসহ অনেকেই সেদিন নিহত হন। শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁকেও পরিবারসহ হত্যা করা হয়। সপরিবারে হত্যার শিকার হন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনিও। দিনটি তাই বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত।