আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: এমনিতে সংখ্যাতত্বের হিসেবে অনেকটা স্পষ্ট ছিল যে এনডিএ পদপ্রার্থী এগিয়েই পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে। আগাম হিসেবনিকেশ ছিলই। বাস্তবে সেই অঙ্কই মিলে যেতে বসেছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের গণনা চলাকালীন প্রথম রাউন্ডেই দেখা গেল, বিরোধী প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানেই পিছনে ফেলেছেন এনডিএ-র পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু।

অঙ্ক বলছে, প্রথম রাউন্ডে দ্রৌপদীর প্রাপ্ত ভোট ৫৪০, যার ভোটমূল্য মোট ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার। আর যশবন্ত সিনহা পেয়েছেন ২২৮ টি ভোট। অর্থাৎ বড়সড় ব্যবধানেই এগিয়ে দ্রৌপদী। ওয়াকিবহাল মহলের মত, পরবর্তী রাউন্ডগুলোয় এই ব্যবধান ঘোচানো প্রায় অসম্ভব। সুতরাং, দেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে রাইসিনা হিলসে দ্রৌপদী মুর্মুর প্রবেশ আর সময়ের অপেক্ষামাত্র।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রথম রাউন্ডের গণনার ফল প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাচনে সোমবার সব মিলিয়ে ভোট দেন ৪,৭৯৭ জন। তার মধ্যে লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদদের ভোটগণনা হচ্ছে আগে। গণনা শেষে ‘হিসাব মিলিয়েই’এগিয়ে রয়েছেন এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু। প্রথম রাউন্ডের শেষে দ্রৌপদীর প্রাপ্ত ভোট ৫৪০, অন্যদিকে বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহা ২২৮টি ভোট পেয়েছেন। দ্রৌপদীর প্রাপ্ত ভোটের মূল্য ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার। আর যশবন্তের প্রাপ্ত ভোটের মূল্য ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬০০। সুতরাং প্রথম রাউন্ডের ফলাফলেই স্পষ্ট, এই ব্যবধান বিশাল।

প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে লোকসভা ও রাজ্যসভায় নির্বাচিত প্রত্যেক সাংসদের ভোটমূল্যই সমান— ৭০৮। কিন্তু বিভিন্ন রাজ্যের বিধায়কদের ভোটমূল্যে রয়েছে তারতম্য।

সোমবার হয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ভোট পড়েছে ৯৮.৯ শতাংশ। ১৬তম রাষ্ট্রপতি ভোটে বিজয়ী প্রার্থী হবেন দেশের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি। কারণ, ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ পর পর দু’বার (১৯৫২ এবং ১৯৫৭) নির্বাচনে জয়ী হন।

পূর্বনির্ধারিত সূচি মেনেই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সংসদ ভবনের সংসদ ভবনের ৬৩ নম্বর ঘরে শুরু হয়েছে ১৬তম রাষ্ট্রপতি ভোটের গণনাপর্ব। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু এবং বিরোধী জোটের যশবন্ত সিন্‌হার মধ্যেই কেউ হতে চলেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দের উত্তরসূরি। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৪টে নাগাদ ভোটের ফল জানা যেতে পারে।

সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চলাকালীনই বিরোধী জোটের প্রার্থী যশবন্ত সিন্‌হা ‘টাকা দিয়ে দল ভাঙানোর’র অভিযোগ তুলেছেন। তা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, লড়াই যে কঠিন সে কথা সম্ভবত ইতিমধ্যেই বুঝে গিয়েছেন অটলবিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্য প্রাক্তন আমলা। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু কিছুটা এগিয়ে বলেই মনে করছেন তারা। সংসদ এবং বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি এবং তার সহযোগীদের ভোটের অঙ্কও দ্রৌপদীরই পক্ষে।

দলগত ভাবে যশবন্ত সিন্‌‌হাকে সমর্থন জানানো হলেও কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি এবং এনসিপির বেশ কয়েক জন বিধায়ক ভোট দিয়েছেন শাসক শিবিরের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দিয়েছেন বলে সোমবার থেকেই জল্পনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রৌপদীর প্রাপ্ত ভোটের অঙ্ক নিয়ে জল্পনা রয়েছে। ভোটের পরেই বিজেপির দাবি করেছে, বিরোধী শিবিরে ভাঙনের অঙ্কে প্রত্যাশা ছাপানো জয় পাবেন দ্রৌপদী।