বাংলাদেশকে রুখতেই যেন আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় নেমেছিলেন হুসাইন শরীফ। ম্যাচের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সই তার প্রমাণ। দ্বিতীয়ার্ধে কমপক্ষে নিশ্চিত ৪ গোল বাঁচিয়ে দিয়েছেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। যেন ‘চীনের বার্লিন প্রাচীর’ তিনি।
তাই মালদ্বীপের গোলের নায়ক আলি ফাসির হলেও বাংলাদেশ হেরেছে আসলে শরীফের কাছেই। তার অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের কারণে ঘরের মাঠের সুবিধাও বাংলাদেশের হার এড়াতে ব্যর্থ। ফিফা উইন্ডোর ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছে কোচ হাভিয়ের কাবরেরা দল। এতে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ২-১ গোলের জয় পেলেও আজ হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তপু বর্মন-শেখ মোরসালিনদের।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের ১৮ মিনিটে মালদ্বীপকে আনন্দে ভাসান আলি ফাসির। হামজা মোহাম্মেদের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে সহজতম এক গোলই যেন করলেন তিনি। কেননা বক্সের মধ্যে থেকে যখন হেডে বল জালে জড়ালেন তখন তাকে বাধা দেওয়ার মতো কোনো ডিফেন্ডার ছিল না বাংলাদেশ।
৩০ মিনিটে যে শটটি নিয়েছিলেন ফাহিম তা ছিল দেখার মতো। কিন্তু ইসা ফয়সালের নেওয়া ক্রসকে বাঁ পায়ের শটে বলকে জালে রাখতে পারেননি তিনি। ৩৪ মিনিটে আরেকটু দারুণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ।
বিরতিতে যাওয়ার আগে সমতায় ফেরার আরেকটা দারুণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। এবার বাংলাদেশকে হতাশ করেছে গোলবার। ৪৪ মিনিটে মোরসালিন কর্নার কিক নিলে সতীর্থর মাথা ছুঁইয়ে বল পান মিডফিল্ডার সোহেল রানা। বাঁ দিকের বক্সের কাছাকাছি থেকে বুলেট গতির এক শটও নেন সোহেল। তবে বাঁ পোস্টে লেগে বল আর জালে জড়ায়নি। এতে আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।
বিরতির পর বেশ কিছু আক্রমণ করলেও ফাইনাল থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। তবে ৭৪ মিনিটে দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন মুজিবুর রহমান জনি। কিন্তু গোলবারে ত্রানকর্তা হয়ে দাঁড়িয়ে যান হুসাইন শরীফ। বাঁ দিকে লাফ দিয়ে বিশ্বস্ত হাতে দলকে গোল হজম থেকে বাঁচিয়ে দেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। ৭৭ মিনিটে আরও একবার বাংলাদেশকে হতাশ করেন শরীফ। বক্সের ভেতর থেকে মোরসালিনের শট তালুবন্দি করেন।
আবার ম্যাচের ৮৬ মিনিটে যে সেভটি করলেন শরীফ তা এক কথায় অনবদ্য। প্রায় ১৬ গজ থেকে নেওয়া মোসালিনের শট বাঁদিক দিয়ে জালে জড়িয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় তা কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। ৯০ মিনিটের সেভটিও কোনো অংশেই কম ছিল না। গোলবার ছেড়ে বেরিয়ে এসে দুই হাত দুই পা দুদিকে ছড়িয়ে বাংলাদেশকে হতাশ করেন তিনি। রাকিবের শট তার শরীরে বাঁধা পায়।
ম্যাচে ভাগ্য যেন বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল না। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে মোরসালিনের নেওয়া কর্নারকে দারুণভাবে ব্যাক ফ্লিক করেছিলেন রাকিব। কিন্তু গোলবারের একদম সামনে দিয়ে বল চলে যায় বাইরে। ভাগ্য সহায় থাকলে অন্য সময় গোলই হতে পারত। সেই সঙ্গে বাংলাদেশও ম্যাচে ফেরা থেকে আরও বহুদূরে চলে যায়। এতো সুযোগ পাওয়ার পরও গোল না পাওয়ায় তাই বাংলাদেশি ফুটবলাররা হতাশায় মাঠে পড়ে থাকলেন বেশ কিছুক্ষণ। যেন মাঠ ছাড়তেই মন চাচ্ছিল না তাদের।