জাতীয় ঐক্যের উদ্দেশ্যে আজ থেকে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ শুরু হচ্ছে। রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশে (কেআইবি) সকালে শুরু হবে এই সংলাপ। আগামী শনিবার এই সংলাপ শেষ হবে।
ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস) আয়োজিত এ সংলাপের মূল লক্ষ্য ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’।
সংলাপের উদ্বোধন করবেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক ও অর্থনীতিবিদ ড. মুশতাক হুসাইন খান।
এরপর সংলাপের প্রথম দিন দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। ‘ঐক্য কোন পথে’ শিরোনামের প্রথম অধিবেশনে রাজনীতিবিদদের মধ্যে থাকবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মাহমুদুর রহমান মান্না, মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, সৈয়দ মহাম্মদ রেজাউল করিমসহ অনেকে।
‘রক্তের ঋণ ও ঐক্যের আকাঙ্ক্ষা’ শিরোনামে দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ অনেকে।
সংলাপের দ্বিতীয় দিনে ‘গুম–খুন থেকে জুলাই গণহত্যা: বিচারের চ্যালেঞ্জ’, ‘সংস্কারের দায় ও নির্বাচনের পথরেখা’ এবং ‘ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা’ শিরোনামে তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এসব অধিবেশনে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও এম তৌহিদ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিএস-এর আহ্বায়ক সাংবাদিক মনির হায়দার জানান, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ একটি রূপান্তরপর্বে প্রবেশ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে এ সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং তাদের সহযোগীদের ১৫ বছরের শাসনকালে দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, তাই তাদের সংলাপে ডাকার সুযোগ নেই।
দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ উদ্দিন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে একত্রিত করাই এই আয়োজনের লক্ষ্য। এ উদ্যোগ বেসরকারি হলেও সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির কোনো গুরুত্ব ছিল না, তেমনি ২০২৪ সালের আন্দোলনে আওয়ামী লীগও পরাজিত শক্তি। তাই তাদের সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর যৌক্তিকতা নেই।
সুচিন্তিতভাবে ফ্যাসিবাদের গোষ্ঠী ও সহযোগীদের এই সংলাপ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। তিনি বলেন, ‘আমরা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে জাতীয় ঐক্য চাই। সংলাপে ফ্যাসিবাদ ও তাদের সহযোগীদের ছাড়া অন্য সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের কোনো শরিক দলকে এই সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সংলাপ শেষে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন।