নিউইয়র্কে আমেরিকান-বাংলাদেশী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো জমজমাট ঈদ আনন্দ মেলা। গত ২৩ জুন রোববার ব্রঙ্কসের বাঙালী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের পার্ডি এভিনিউ এলাকায় অনুষ্ঠিত এ মেলা পরিনত হয়েছিল একখন্ড বাংলাদেশে। দেশ-প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীদের জমকালো সাংস্কৃতিক পরিবেশনা প্রাণভরে উপভোগ করেন মেলায় আসা বিপুল দর্শক-শ্রোতা। মেলায় বাংলাদেশী রকমারী পোশাক, প্রসাধন, অলংকার, উপহার সামগ্রী, রিয়েল এস্টেট, নিউইয়র্ক সিটি ও স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্টের অনুমোদিত বাংলাদেশী ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী ও স্থাস্থ্য সেবা, বাঙালি খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে বিক্রেতারা। খবর ইউএসএনিউজঅনলাইন’র।
বিকেল ৪টায় বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। আমেরিকান বাংলাদেশি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’র সভাপতি আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও মেলা কমিটির কনভেনর শেখ জামাল হোসেন। এটর্নী মঈন চৌধুরী ও গোল্ডেন এজ হোম কেয়ার প্রেজেন্টস এই মেলাটি উদ্বোধন করেন কুইন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ এটর্নি মঈন চৌধুরী। অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা, ব্রঙ্কস ব্যরো প্রেসিডেন্ট ভ্যনাসা গিবসন, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ার সিইও এবং আজকাল সম্পাদক শাহ নেওয়াজ ও মেয়র অফিসের চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মীর বাশার। নির্বাচনী ব্যস্ততা থাকায় প্রধান অতিথি ওকাসিও কর্টেজ অনুষ্ঠানে আসতে পারেন নি বলে জানা গেছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব রেজা আব্দুলাহ ও শারমিন সোনিয়া। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, সিপিএ আহাদ আলী, খলিল বিরিয়ানীর সিইও খলিলুর রহমান, সাংবাদিক আবু তাহের, সাংবাদিক লাবলু আনসার, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট তোফায়েল চৌধুরী লিটন, সালেহ আহমেদ, এডভোকেট নাসির উদ্দীন, মেহের চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক, ইমরান রন শাহ, রেদোয়ানা সেতু, নুরুল ইসলাম, কাজী রবিউজ্জামান, কমিশনার রবিউল হোসেন, মামুন সরকার প্রমুখ।
শেষ বিকেলে মেলাঙ্গন দর্শনার্থীদের পদভারে পূর্ণ হয়ে যায়। বিপুল সংখ্যক দর্শনার্র্থীর অংশগ্রহণে শেষ হয় এ আনন্দ সমাবেশ। মেলায় ছিল আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র।
মেলায় সংগীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী বিন্দু কনা, দিনাত জাহান মুন্নী, রানো নেওয়াজ, শাহ মাহবুব, অনিক রাজ, তানভীর শাহিন, ইশরাত শারমিন, প্রেমা, সজীব, শুভ প্রমুখ। বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
মেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে এটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, আমেরিকান বাংলাদেশি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’র আমি নিজে একজন উপদেষ্টা। এই সংগঠনের যেকোন কল্যাণমূলক কাজের আমি অংশীদার। আজকের বিপুল মানুষের এ মেলা প্রমাণ করেছে জনভিত্তি নিয়ে এই সংগঠন এগিয়ে চলেছে। সংগঠনটির উন্নয়নে আমি সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, প্রবাসে বাঙালী সংস্কৃতি তুলে ধরতে তাদের এধরনের আয়োজন বিরাট ভূমিকা রাখে।
মেলার গ্রান্ড স্পন্সর শাহ নেওয়াজ বলেন, আমি ব্রঙ্কস কিিমউনিটির একজন সদস্য। আমার হোম কেয়ার ব্যবসার গোড়াপত্তন ব্রঙ্কসের ঠিকানায়। আমি কুইন্সে বসবাস করলেও ব্রঙ্কস বাংলাদেশ কিিমউনিটির সাথে আমার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। তিনি কমিউনিটির উন্নয়নে আরো ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রবাসে বাঙালী সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও দেশীয় পণ্যের প্রসারে এধরনের আয়োজন বিরাট ভূমিকা রাখে।
ব্রঙ্কস ব্যরো প্রেসিডেন্ট ভ্যনাসা গিবসন বলেন, নিউইয়র্কের উন্নয়নে বাংলাদেশী কমিউনিটির অবদান অনেক। কমিউনিটিকে আরো এগিয়ে নিতে মূলধারার রাজনীতিতে অংশ নিতে হবে। আসন্ন নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি সকলকে ভোট দানে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আব্দুস শহীদ মেলায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মূলধারার সাথে বাংলাদেশী কমিউনিটির সেতুবন্ধন রচনা সহ বাংলাদেশে আত্মমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও মেলা কমিটির কনভেনর শেখ জামাল হোসেন বলেন, প্রবাসে দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সংগঠনটি। এ ধারবাহিকতায় সংগঠনটি বাঙালী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসে পথমেলাসহ নানা আয়োজন করে আসছে।