NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় নিরলস কাজ করছে সরকার - আদিলুর রহমান জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ বাংলাদেশের ট্রাম্পের ১০০ দিন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে বদলে যাচ্ছে বিশ্বব্যবস্থা ট্রাম্পের হুমকিতে কখনোই নতি স্বীকার করবে না কানাডা সেই কনস্টেবল পেলেন পিপিএম পদক, দেখা করলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজারবাইজানকে বিনিয়োগের পাশাপাশি মানবসম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান ‘তারা এখন আমাকে সম্মান করেন’—বেজোস ও জাকারবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্প বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক ‘কিং’ শাহরুখের রানি দীপিকা, জমবে কি পুরনো ম্যাজিক
Logo
logo

সৌদির খেজুর চাষে বাজিমাত বগুড়ার হানিফার


খবর   প্রকাশিত:  ০৯ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৮:২২ এএম

>
সৌদির খেজুর চাষে বাজিমাত বগুড়ার হানিফার

হজ করে ফিরে আসার সময় আজোয়া খেজুর নিয়ে আসেন। তারপর বীজ সংরক্ষণ করেন চারার জন্য। ১৬টি চারা আসার পর ৯ শতক জমিতে লাগান। সেখান থেকে টেকে ১৩টি গাছ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি গাছে প্রথম ফলন আসে। তারপর গত তিন মাসে সব গাছে ধরে থোকায় থোকায় খেজুর। কিছুদিনের মধ্যেই হবে খাওয়ার উপযোগী।

ভিনদেশি ফলের সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছেন নন্দীগ্রাম উপজেলার কড়িরহাট এলাকার আমড়া গোহাইল গ্রামের মো. আবু হানিফা। সৌদি খেজুর চাষ করে তিনি এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন স্থানীয়দেরও।

প্রতিদিন হানিফার বাগানে লোকজন আসছেন খেজুরগাছ ও ফল দেখতে। খেজুরের পাশাপাশি তার অন্য ফলদ বাগানের সফলত দেখে এলাকার অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন ফলের বাগানে।

অন্যদিকে বগুড়ার মাটিতে সৌদি আরবের মরুভূমির আজোয়া খেজুর চাষের নতুন সম্ভাবনাকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও কৃষিক্ষেত্রে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে কৃষি বিভাগ।

আবু হানিফা বগুড়া শহরের চকলোকমান মাদরাসাসহ বিভিন্ন মাদরাসায় দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। পরিবারে তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও চার ছেলে রয়েছে। এখন তিনি গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বাড়ির আশপাশে খেজুরসহ বিভিন্ন ফলমূলের সমন্বিত চাষপদ্ধতিতেই এখন তার সময় কাটে।

সফল উদ্যোক্তা আবু হানিফা জানান, ২০১৮ সালে তিনি হজ করে সৌদি থেকে আসার সময় আজোয়া খেজুর এনে বীজগুলো সংরক্ষণ করে টবে চারা তৈরি করেন। টবে দেড় বছর রেখে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ১৬টি চারা রোপণ করেন ৯ শতক জমিতে। পাশাপাশি মাল্টা, আপেল কুল, বারোমাসি আম, বারি ফোর, কিউজাই, মিষ্টি তেঁতুল, কামরাঙ্গা, আলুবোখারাগাছও লাগান। পরিচর্যার পর প্রায় প্রতিটি গাছে ফল দিতে শুরু করে।

এ ছাড়া তিনি এক বিঘা জমিতে আরও একটি সমন্বিত বাগান গড়ে তোলেন। সেখানে লিচু, ১০ প্রজাতির আম, পেঁপে, সফেদা, গোলাপজাম, দারুচিনি, জামরুল, আদা ও হলুদ লাগিয়েছেন। এগুলোতেও পরিচর্যার পর ফলন আসে। প্রতিটি গাছকে সন্তানের মতো যত্ন করায় আস্তে আস্তে তার বাগান বেড়ে উঠছে এবং গাছে ফল ধরছে।

তার বাগানের প্রথম খেজুর তিনি তার পরিবার, আত্মীয়স্বজন, পাড়াপ্রতিবেশীকে খাওয়াতে চান এবং যারা সবচেয়ে বেশি উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়েছেন, সেই কৃষি বিভাগ ও হর্টিকালচার সেন্টারের সংশ্লিষ্টদেরও খাওয়াতে চান। এরপর তিনি এই চাষপদ্ধতি ও ফল বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের যেকোনো অঞ্চলে খেজুর চাষের সম্ভাবনা সম্পর্কে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রিকালচারাল বোটানি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজওয়ানা নিজাম জানান, বাংলাদেশের আবহাওয়া এখন আগের চেয়ে অনেক উষ্ণ হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ গ্রীষ্মের ভাব বেশি সময় ধরে থাকে। যে কারণে সৌদি আরবের আবহাওয়াসহিষ্ণু ফল এখান বাংলাদেশে সহজে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের মাটিতে এখন আগের চেয়ে লবণাক্ততার পরিমাণও অনেক বেড়েছে। যে কারণে এ ফলন ভালো হচ্ছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হর্টিকালচার সেন্টার বনানীর উপপরিচালক মো. আব্দুর রহিম বলেন, সৌদি খেজুর মরুভূমির ফসল। এই ফসল চাষের জন্য বিশেষ যত্ন নিতে হয়। আর এই চাষের জন্য টিস্যু কালচার পদ্ধতি জরুরি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই পদ্ধতির মাধ্যমে গাছগুলোর বেশির ভাগ স্ত্রী গাছ হবে। চাষিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। যদিও এটা অনেক ব্যয়বহুল ও সব জায়গায় এই ব্যবস্থা নেই। তবে বগুড়ার হর্টিকালচার সেন্টারে টিস্যুকালচার পদ্ধতি চালু করার প্রায় সব ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, বগুড়ার কাহালু শেরপুর ও নন্দীগ্রামে কৃষকরা নিজ উদ্যোগে খেজুরগাছ লাগিয়েছেন। সফলতাও পেয়েছেন অনেকে। সম্প্রতি জানতে পারি মো. আবু হানিফা নামের এক ব্যক্তি খেজুর চাষে সফলতা পেয়েছেন। এখন যদি খেজুরের স্বাদ, পুষ্টিগুণ ও উৎপাদনের পরিমাণ ঠিক থাকে, তাহলে এ এলাকার জন্য এটি একটি নতুন দৃষ্টান্ত হবে।

সৌদি খেজুর চাষের এই উদ্যোগ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।