NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, মঙ্গলবার, মে ২০, ২০২৫ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Logo
logo

পাকিস্তানে ‘বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে’ কোরীয় কোম্পানির কার্যক্রম


খবর   প্রকাশিত:  ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৬:২৮ এএম

>
পাকিস্তানে ‘বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে’ কোরীয় কোম্পানির কার্যক্রম

কাঁচামাল আমদানিতে সীমাবদ্ধতা এবং বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনার ছাড় করাতে দেরি হওয়ায় পাকিস্তানে যে কোনো সময় দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।  

প্রভাবশালী এ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির (কোতরা) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা এবং লোকাল চেম্বার অব কোরিয়ানের বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, কাঁচামাল আমদানিতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলতে না পারার কারণে তাদের কোম্পানিগুলোর ‘কয়েক মিলিয়ন ডলার’ ক্ষতি হচ্ছে।

পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন ডলার সংকটে ভুগছে, যার কারণে প্রায় সব ধরনের আমদানি সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ প্রদানের বিষয়টি শঙ্কায় থাকার বিষয়টি পাক অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে ৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। যা দিয়ে ২০ দিনের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।

করাচিস্থ চেম্বার অব কোরিয়ান ইনভেস্টরের চেয়ারম্যান হান চুং অভিযোগ করেছেন তারা কোনো সহায়তাই পাচ্ছেন না। তিনি বলেছেন, ‘আমি ব্যাংকের সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছি। এমনকি ২০ হাজার ডলারের মতো ছোট রেমিটেন্সের জন্য লড়াই করছি। আমদানির জন্য অগ্রিম পেমেন্টেরও ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না। ডাউনস্ট্রিম ইন্ড্রাস্ট্রির ক্ষেত্রেও এ পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে।’

পাকিস্তানে বর্তমানে প্রায় ২৫টি দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার মধ্যে কিয়া, হুন্দাই, লোট্টে এবং স্যামসাংয়ের মতো বড় কোম্পানিগুলো মাত্র কয়েক বছর আগে ইসলামাবাদে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। কিছু কোরিয়ান কোম্পানি সামুদ্রিক খাবার এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজেও নিয়োজিত আছে। বিশ্বখ্যাত কোম্পানি কুমিয়াং ২০২১ সালে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টের মাধ্যমে ৩ মিলিয়ন ডলার এনে পাকিস্তানে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। যেটি মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে ক্যামিকেল পণ্য রপ্তানি করে আসছে।

কোতরা করাচির পরিচালক সুং জে কিম বলেছেন, এ সংকট শুরু হয়েছে গত তিন মাস আগে থেকে। এরপর থেকে পরিস্থিতি শুধু খারাপই হয়েছে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানুয়ারিতে করাচি বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনার ছাড় করার নির্দেশনা দেওয়ার পরও এমন অচলাবস্থা চলছে।

তিনি পাকিস্তানের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে নতুন এলসি খোলা এবং যেসব এলসি ঝুলে আছে সেগুলোর যেন দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

তিনি জানিয়েছেন, তারা বুঝতে পারছেন ডলার সংকটের কারণে সরকার এমন করছে। কিন্তু কাঁচামাল আমদানি বন্ধ রাখা কোনো সমাধান না। তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চলতে হবে, ব্যবসায়িক কার্যক্রম অবশ্যই চলতে হবে।’

কোতরা করাচির পরিচালক সুং জে কিম আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তানে যেসব কোম্পানি আছে সেগুলো গত এক বছর ধরে সিউলে অবস্থিত তাদের সদর দপ্তরে কোনো লাভের অর্থ পাঠাতে পারেনি।

এছাড়া অনিশ্চয়তার কারণে পাকিস্তানে কোরিয়ার কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করতেও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।