NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, মে ১, ২০২৫ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় নিরলস কাজ করছে সরকার - আদিলুর রহমান জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ বাংলাদেশের ট্রাম্পের ১০০ দিন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে বদলে যাচ্ছে বিশ্বব্যবস্থা ট্রাম্পের হুমকিতে কখনোই নতি স্বীকার করবে না কানাডা সেই কনস্টেবল পেলেন পিপিএম পদক, দেখা করলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজারবাইজানকে বিনিয়োগের পাশাপাশি মানবসম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান ‘তারা এখন আমাকে সম্মান করেন’—বেজোস ও জাকারবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্প বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক ‘কিং’ শাহরুখের রানি দীপিকা, জমবে কি পুরনো ম্যাজিক
Logo
logo
যুক্তরাষ্ট্রে ডিটেনশন সেন্টারের বিরুদ্ধে মামলা

১০০ ডলারের অভাবে জামিন হয়নি, কারাগারেই মৃত্যু ইউজেনের


খবর   প্রকাশিত:  ০২ জানুয়ারী, ২০২৪, ১২:১৩ পিএম

১০০ ডলারের অভাবে জামিন হয়নি, কারাগারেই মৃত্যু ইউজেনের

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: গৃহহারা এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ৫০ বছর বয়সী ল্যারি ইউজেন প্রাইস মাত্র ১০০ ডলারের অভাবে জামিনে মুক্ত হতে পারেননি। ডিটেনশন সেন্টারের লোকজনও তার সাথে ভালো ব্যবহার করেনি। ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট গ্রেফতারের সময় ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা ইউজের ওজন ছিল ২০০ পাউন্ড। আর এক বছর পর তার মৃত্যুর সময় ওজন কমে মাত্র ৯০ পাউন্ড হয়েছিল। মানসিক ভারসাম্য একেবারেই হারিয়ে ফেলা ইউজেন শেষের দিকে নিজের মল-মূত্র ভক্ষণ করেন বলে রক্ষীরা উল্লেখ করেন। তবুও তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, আরকানসাস স্টেটের উত্তর পশ্চিমে ছোট্ট একটি পুলিশ স্টেশনের (ফোর্ট স্মীথ) আশপাশেই ঘুরঘুর করতেন ইউজেন প্রাইস। মজা-ঠাট্টাও করতেন মাঝেমধ্যে। গৃহহারা ইউজেন প্রাইসকে এই স্টেশনের একজন অফিসার প্রায়ই দেখতেন অস্বাভাবিক আচরণ করতে। এক পর্যায়ে নিরুদ্দেশ হয়েও যেতেন। আগস্টের করোনা মহামারিকালে এক দিন পুলিশ স্টেশনের দিকে নিজের আঙ্গুল তাক করেছিলেন বন্দুকের মতো। এক অফিসারকে নিশানা করেছিলেন। হুমকি দেন মেরে ফেলার। কর্তব্যরত অফিসারেরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ইউজেন প্রাইসকে গ্রেফতার করে এবং সন্ত্রাসী হামলার হুমকি প্রদানের অভিযোগ দায়ের করা হয়। 
যদিও তার কাছে অস্ত্র দূরের কথা একটি লাঠিও ছিল না-যা হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

নিউজউইকে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইউজেনের ভাগ্য ভাল যে, জর্জ ফ্লয়েডের মতো ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরা হয়নি। সরাসরি তাকে হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতারের পর সেবাস্টিয়ান ডিটেনশন সেন্টারে নেয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, ফোর্ট স্মীর্থ এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃতদের এই সেন্টারেই রাখা হয়। পরদিন তাকে নিকটস্থ কোর্টে সোপর্দ করলে এক হাজার ডলার বন্ডে মুক্তি দেয়া হয়। এক পর্যায়ে তা কমিয়ে মাত্র একশত ডলার ধার্য করেন আদালত। সেটিও সংগ্রহে সক্ষম না হওয়ায় ডিটেনশন সেন্টারে মাসের পর মাস কাটাতে হয় অবর্ণনীয় জুলুম-নির্যাতনের মধ্যে। এমন বর্বরোচিত আচরণের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবিতে শুক্রবার সেবাস্টিয়ান কাউন্টি ডিটেনশন সেন্টারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ইউজেনের পরিবার।

 

মামলা দায়েরকারি সিয়াটলের এটর্নি এরিক হীপ শনিবার গণমাধ্যমকে জানান, অমানবিক আচরণের জঘন্যতম উদাহরণে পরিণত হয়েছে সেবাস্টিয়ান ডিটেনশন সেন্টার। টানা এক বছরের অমানবিক আচরণের অসহায় ভিকটিম হয়েছেন ইউজেন। ২০২১ সালের আগস্টে ৫১ বছর বয়সে ইউজেন পরলোকগমন করেছেন ওই ডিটেনশন সেন্টারেই। সে সময় তাকে স্বজনেরাও শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।

মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে এটর্নি এরিক আরো বলেন, নির্দয় আর নিষ্ঠুর আচরণের এখানেই শেষ নয়। ইমার্জেন্সি মেডিকেল সার্ভিসের রেকর্ড অনুযায়ী, ইউজেনের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্ত ডিটেনশন সেন্টারের কর্মকর্তারা নথিপত্রে দৈনিক বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন যে, ‘ইউজেন সেলেই রয়েছেন এবং সবকিছু ঠিক আছে’।

এটর্নি উল্লেখ করেন, আমি হতবাক এ কারণে যে, স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে সক্ষম নন এবং মানসিকভাবে প্রতিবন্দ্বী একজন মানুষ, যিনি মাত্র ১০০ ডলার সংগ্রহে সক্ষম হননি, তাকে লাগাতার ১২ মাস নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছিল।

২৯ পাতার এই মামলার বিবরণীতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইউজেনের বিরুদ্ধে সাজাও ঘোষণা করা হয়নি অর্থাৎ তিনি বিচারের অপেক্ষায় ছিলেন এমন একটি অভিযোগে, যা তার পক্ষে কখনোই করা সম্ভব হয়নি। এমনকি, আপনি যদি অন্যসবকিছুকে এক পাশে রেখে দেন, তবুও এটি বিচার ব্যবস্থার সাথে তামাশা বৈ কিছু হবে না। এ ধরনের নৃশংসতার কোন অজুহাত থাকতে পারে না।

আরকানসাস স্টেটের ওয়েস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়েরকৃত এই মামলার বিবাদিগণের মধ্যে এই ডিটেনশন সেন্টারের বাসিন্দাদের চিকিৎসা-সেবা প্রদানের জন্যে চুক্তিবদ্ধ ওকলাহোমা সিটির ‘টার্ন কী হেলথ ক্লিনিক’ও রয়েছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ অনুযায়ী, জর্জ ফ্লয়েড হত্যার দু’মাস পর আমেরিকানদের ৯০% বলেছিলেন যে, কারারক্ষীসহ পুলিশ অফিসারদের আচরণের ব্যাপারে বিশেষ ট্রেনিং দরকার, যাতে গ্রেফতারের সময়ে পুলিশ অফিসারেরা হিংস্র হয়ে না উঠেন।