খবর প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারী, ২০২৪, ১১:২৭ এএম
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইউক্রেনের দক্ষিণ উপকূলীয় শহর মাইকোলাইভের বাসিন্দারা গত ছয় মাস ধরে বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভুগছে। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর বিবিসি জানিয়েছে, গত এপ্রিলে রুশ বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে ওই অঞ্চলে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
মাইকোলাইভ শহরটি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণেই আছে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি এবং বিভিন্ন উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যাওয়া পানির বড় পাইপলাইনের অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করা হয়েছিল।
মাইকোলাইভে বর্তমানে নাগরিকদের নির্দিষ্ট স্থানে পানি বন্টন করা হয়। প্রতিদিন ২০ লিটার করে পানি পান একেকজন। বাসিন্দাদের এখন লম্বা সারিতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে এ পানি সংগ্রহ করতে হয়। বিপদ মাথায় নিয়ে তারা পানি সংগ্রহ করতে যান। কেননা শহরটি সম্মুখ যুদ্ধক্ষেত্রের খুব কাছে এবং প্রায়শই সেখানে গোলাগুলি হয়।
রাশিয়ায় সংযুক্ত করে নেওয়া খেরসন থেকে পালিয়ে আসা নারী আনিয়া বলেন, ‘এখানে ঘরের বাইরে যাওয়া খুবই ভয়ানক। সবসময় মনে হয় কিছু একটা উড়ে আসতে পারে। ’
বাসার সদস্যসংখ্যা বেশি হলে ঘরেই পানি সরবরাহের ব্যবস্থা আছে তবে তা পান করার উপযুক্ত নয়। এতে মুখ ধুলেও ত্বকের ক্ষতি হয়। আনিয়া বলেন, ওই পানি খুবই লবণাক্ত। অনেকটা বাদামি কিংবা সবুজ রঙের। গত ছয় মাস ধরে এখানের বাসিন্দারা এভাবেই জীবন যাপন করছে।
বিবিসি নিজস্ব অনুসন্ধানে ‘প্রমাণ’ জোগাড় করে বলেছে, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে পাইপলাইন নষ্ট করেছে। এ সংক্রান্ত ছবিও প্রকাশ করেছে গণমাধ্যমটি।
স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিতে দেখা যায়, পাইপলাইন নষ্ট হওয়ার সময় কাছেই চারটি রুশ ট্যাংক ছিল। এসময় পাইপলাইনের ওই জায়গাটি রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখন তা সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র হওয়ায় পাইপ মেরামত করা সম্ভব হয়নি বলে জানান মাইকোলাইভের গভর্নর ভিতালি কিম।
সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক সম্পদ ধ্বংস করা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত। এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোন উত্তর দেয়নি। সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুত্ এবং পানির অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে দেশজুড়ে বিদ্যুত্ ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি ও আলজাজিরা