খবর প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:১৪ এএম
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। রবিবার পর্যন্ত ঘুরেফিরে বারবারই সামনে এসেছে ঋষি সুনাক ও বরিস জনসনের নাম। গত শনিবার রক্ষণশীল দলের এ দুই নেতা মুখোমুখি আলোচনায় বসেছিলেন বলেও খবর এসেছে গণমাধ্যমে।
ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে তাঁর অংশ নেওয়ার বিষয়টি রবিবার নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে টরি নেতা জ্যাকব রিস-মগ বলেছেন, জনসন ‘স্পষ্টতই’ এই লড়াইয়ে অংশ নেবেন।
গত বৃহস্পতিবারের আগেও পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। লিজ ট্রাস যখন পদত্যাগ করেন, তখন বরিস জনসন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। পরিস্থিতি দেখে তড়িঘড়ি করে দেশে ফেরেন তিনি। সুনাককে সরে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
ধারণা করা হচ্ছে, গত কয়েক মাসের মধ্যে এবারই প্রথম সামনাসামনি আলোচনায় বসেছেন সুনাক ও জনসন। একাধিক গণমাধ্যমের দাবি, জুলাইয়ে জনসন পদত্যাগ করার পর থেকেই দুজনের মধ্যে সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল।
জনসন ও সুনাকের বৈঠকটিকে এরই মধ্যে ‘সিক্রেট সামিট’ বা ‘গোপন শীর্ষ বৈঠক’ বলে অভিহিত করেছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান। অন্যদিকে সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত চলেছে দুজনের বৈঠক। আর দ্য সানডে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন বলছে, টরির ‘গৃহযুদ্ধ’ এড়াতে দুজন যৌথ টিকিটে লড়ার ব্যাপারে সম্মত হতে আলোচনায় বসেছিলেন। এ ছাড়া বিস্তারিত তেমন কিছু জানা যায়নি।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর বলছে, রক্ষণশীলদের নেতা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সুনাক। সোমবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় ১০০ এমপির সমর্থন কুড়াতে বেগ পেতে হবে না তাঁকে। খবরে জানা গেছে, রবিবার পর্যন্তই সব মিলিয়ে ১৩৬ টরি আইন প্রণেতা সমর্থন জানিয়েছেন তাঁর প্রতি। অন্যদিকে জনসনের রয়েছে ৫২ আর পেনি মর্ডান্টের ২৩ এমপির সমর্থন।
এক পর্যায়ে খবর রটেছিল, ভালো পদের বিনিময়ে জনসনকে সমর্থন দেবেন দৌড়ে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা মর্ডান্ট। কিন্তু রবিবার সে কথা অস্বীকার করে দলের তৃণমূলে জনপ্রিয় মর্ডান্ট বলেন, তিনি জয়ী হওয়ার জন্যই লড়াইয়ে নেমেছেন।
লিজ ট্রাসের বিতর্কিত ‘মিনি বাজেট’ নিয়েও খেদ প্রকাশ করেন মর্ডান্ট। তিনি আরো বলেন, বিজয়ী হলে নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে চ্যান্সেলর হিসেবে বহাল রাখবেন।
এদিকে সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, টরি শিবিরে সুনাকের প্রতি সমর্থন ‘প্রতি ঘণ্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছে’। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গ্র্যান্ট শাপস, কর্ম ও অবসর ভাতা মন্ত্রী ক্লোয়ি স্মিথসহ কয়েকজন প্রকাশ্যেই সুনাকের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন।
অন্যদিকে জনসনের ঝুলিতে যোগ হয়েছে উন্নয়নমন্ত্রী সাইমন ক্লার্ক, উত্তর আয়ারল্যান্ড মন্ত্রী ক্রিস হিটন-হ্যারিস, সিওপি২৬ প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা, চ্যান্সেলর অব দ্য ডাচি অব ল্যাংকাস্টার নাদিম জাহাওয়ি এবং পরিবহনমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রেভেলিয়ানের সমর্থন।
ক্ষমতাসীন দলের নতুন নেতা নির্বাচন নিয়ে এ তত্পরতার মধ্যে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা স্যার কেয়ার স্টার্মার আবারও সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি রক্ষণশীল দলকে ‘বিশৃঙ্খল সার্কাস’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।