NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় নিরলস কাজ করছে সরকার - আদিলুর রহমান জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ বাংলাদেশের ট্রাম্পের ১০০ দিন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে বদলে যাচ্ছে বিশ্বব্যবস্থা ট্রাম্পের হুমকিতে কখনোই নতি স্বীকার করবে না কানাডা সেই কনস্টেবল পেলেন পিপিএম পদক, দেখা করলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজারবাইজানকে বিনিয়োগের পাশাপাশি মানবসম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান ‘তারা এখন আমাকে সম্মান করেন’—বেজোস ও জাকারবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্প বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক ‘কিং’ শাহরুখের রানি দীপিকা, জমবে কি পুরনো ম্যাজিক
Logo
logo

হিজাববিরোধী আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল: খামেনি


খবর   প্রকাশিত:  ১২ জানুয়ারী, ২০২৪, ০১:১০ পিএম

>
হিজাববিরোধী আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল: খামেনি

মাহসা আমিনির মৃত্যু ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভে দেশজুড়ে যে অস্থিরতার ঢেউ চলছে তাতে চিরশত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল  উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। 

সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলছি, এই দাঙ্গা এবং নিরাপত্তাহীনতা আমেরিকা, দখলদার, মিথ্যা ইহুদিবাদী ইসরায়েলের ষড়যন্ত্র। এছাড়া এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে বিদেশে অবস্থানরত কিছু বিশ্বাসঘাতক ইরানির সাথে তাদের অর্থপ্রদানকারী এজেন্টরা যোগ দিয়েছে।

হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২১ বছর বয়সী মাহসা আমিনীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মারা যায় মাহসা আমিনী।

পুলিশি নির্যাতনে আমিনীর প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এই ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ।

আমিনীর মৃত্যুর পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় ৮৩ বছর বয়সী খামেনি জোর দিয়ে বলেছেন, পুলিশ অবশ্যই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যারা পুলিশকে আক্রমণ করে তারা অপরাধী, গুণ্ডা, চোরদের বিরুদ্ধে জনগণকে অরক্ষিত করে তোলে।

খামেনি বলেন, ‘ওই তরুণীর মৃত্যু আমাদের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু যা স্বাভাবিক নয় তা হল, কিছু লোক প্রমাণ বা তদন্ত ছাড়াই রাস্তা-ঘাটকে বিপজ্জনক করে তুলেছে, কোরআন পুড়িয়েছে, পর্দাহীন নারীদের হিজাব খুলে ফেলেছে এবং মসজিদ ও গাড়িতে আগুন দিয়েছে।’

তেহরানের প্রখ্যাত শরিফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে সোমবার রাতভর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযান ঘিরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীর ওপর দাঙ্গা পুলিশ পেলেট গান, টিয়ার গ্যাস ও পেন্টবল বন্দুক ব্যবহার করেছে।

দেশটির সংবাদ সংস্থা মেহের নিউজ অ্যাজেন্সি বলছে, রাতে শরিফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ সময় তারা ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’, ‘শিক্ষার্থীরা অপমানের চেয়ে মৃত্যু পছন্দ করে’ বলে স্লোগান দেন। পরে পরিস্থিতি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যান দেশটির বিজ্ঞান মন্ত্রী মোহাম্মদ আলী জোলফিগোল।

অসলো-ভিত্তিক ইরানি মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটসের (আইএইচআর) পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে থাকা পুলিশ সদস্যরা একটি আন্ডারগ্রাউন্ড গাড়ি পার্কিং দিয়ে ছুটে চলা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছে এবং যাদের মাথা কালো কাপড়ের ব্যাগে ঢাকা ছিল তাদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

তেহরান মেট্রো স্টেশন এলাকার একটি ভিডিওতে একদল জনতাকে ‘ভয় পাবেন না! ভয় পাবেন না! আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ!’ স্লোগান দিতেও শোনা যায়। 

জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এক টুইটে বলেছেন, "ইরানের শরিফ ইউনিভার্সিটিতে যা ঘটছে তা সহ্য করা কঠিন। ইরানিদের সাহস অবিশ্বাস্য। এবং শাসকদের নৃশংস বাহিনী শিক্ষা এবং স্বাধীনতার শক্তিকে ভয় পাচ্ছে।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। এই বিপ্লবের পর এবারই প্রথম ইরানের হিজাববিরোধী আন্দোলনকারী নারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সমাবেশ হয়েছে। শনিবার বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি শহরে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন।

ইরানের সংখ্যালঘু কুর্দিদের আবাসস্থল দেশটির পশ্চিমাঞ্চল। মাহসা আমিনীও কুর্দি অধ্যুষিত দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দা। তার মৃত্যুর পর ওই অঞ্চলে প্রথম ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ধীরে দেশটির অন্যান্য সব শহরে ছড়িয়ে পড়ে। টানা ১৭ রাত ধরে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভকারীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।