NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, মঙ্গলবার, মে ২০, ২০২৫ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
Logo
logo

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন বায়রার


খবর   প্রকাশিত:  ২০ মে, ২০২৫, ০৯:০৫ এএম

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন বায়রার

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা)-এর দুটি পক্ষ। তারা এই শ্রমবাজারে কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেটের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দুটি পক্ষের মধ্যে একটির নেতৃত্বে রয়েছেন বায়রার সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজ উল ইসলাম এবং ফখরুল ইসলাম। অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বায়রার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন এবং আতিক ইসলাম।

 

তাদের একটি পক্ষ মনে করছে, মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অনলাইনে ডাটাবেজ সমৃদ্ধ করে অনলাইন সিস্টেমে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে হবে। তাহলে কম খরচে কর্মী পাঠানো সম্ভব।

অন্যদিকে আরেকটি পক্ষ বলছে, সরকারের হয়ে একটি গ্রুপ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ করতেই নানান তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যেখানে বিগত সময়ে সিন্ডিকেটের সঙ্গে থাকা সদস্যরাও রয়েছেন। কিন্তু তারা আজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

 

সোমবার (১৯ মে) দুপুরে শফিকুল কবির মিলনায়তন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) দ্বিতীয় তলায় পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি ও অভিযোগ করেন তারা।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন শুরুর মুহূর্তে একটি পক্ষের ওপর অপরপক্ষ হামলা চালায়। হামলায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন বলে দাবি করেছেন তারা। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতাদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এরপর বিকেল ৩টায় ডিআরইউ ভবনের দ্বিতীয় তলায় বায়রার সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াজ উল ইসলাম এবং ফখরুল ইসলাম গ্রুপের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। তারা এ সময় দাবি করেন, তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে বায়রার সাবেক যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন এবং আতিক ইসলাম পক্ষের লোকজন। যারা বিগত সময়ের সিন্ডিকেটের সক্রিয় লোকজন। তবে এ হামলাকে অস্বীকার করেছেন সাজ্জাত গ্রুপের সদস্য আতিকুর রহমান আতিকসহ অন্যরা।

 

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা মালয়েশিয়া সফর করেছেন এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে রাষ্ট্রীয় মদদে সিন্ডিকেট হয়েছে, যেখানে বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা জড়িত ছিলেন। সেসময় তারা ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদউদ্দিন চৌধুরী, সাবেক অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালকে নিয়ে সিন্ডিকেট করেছেন। এখনো আওয়ামী লীগের শফিকুল আলম ফিরোজ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হাসান সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করছেন।

তিনি আরও বলেন, আগে কোনো এজেন্সিকে সিন্ডিকেটে ঢুকতে ৫ কোটি দেওয়া লাগতো, এখন তারা ১৪ কোটি টাকা দাবি করছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আজ আমাদের সংবাদ সম্মেলনে কিছু লোক না বুঝে বহিরাগতদের দিয়ে হামলা চালায় এবং রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভাঙচুর চালায়। শারীরিকভাবে আমাকে, মোস্তফা মাহমুদ, মনির ভাইকে আহত করেছে। আগের সিন্ডিকেট চক্র নামে-বেনামে সিন্ডিকেট করার পাঁয়তারা করছে। প্রধান উপদেষ্টাকে বলবো আপনি কোনোভাবে এই সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করবেন না। নেপালে সিন্ডিকেটের গুঞ্জন উঠেছিল, কিন্তু নেপাল সরকার সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে তারা সিন্ডিকেট চায় না।

এদিকে, ফখরুল গ্রুপের সংবাদ সম্মেলন শেষের পরই শফিকুল কবির মিলনায়তনে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করে অপর পক্ষ। এ পক্ষের সদস্যদের পক্ষ থেকে আতিকুর রহমান আতিক নামে এক নেতা অভিযোগ করেন, যারা আজকের সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিল তারা ভারতের স্বার্থ হাসিল করার জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে বন্ধ করতে চায়।

 

 

 

সংবাদ সম্মেলনে মেজবাহ উদ্দিন সেলিম নামে বায়রার এক সদস্য অভিযোগ করেন, এসব স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নিজের স্বার্থের বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারেন না। দেশের অভ্যন্তরে মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা চালানো এবং মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মতো মামলা-মোকদ্দমায় ইন্ধন যুগিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় রিপোর্ট প্রেরণ করেছেন। এতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের টিআইপি র্যাংকিংয়ের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ফলে দেশের রপ্তানি খাত এবং জনশক্তি সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মালয়েশিয়া সরকার এরই মধ্যে অন্যান্য সোর্স কান্ট্রি থেকে কর্মী নিয়োগ শুরু করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এসব মামলা-মোকদ্দমার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনীহা প্রকাশ করছে।