খবর প্রকাশিত: ০১ মে, ২০২৫, ০৯:০৫ এএম
"শুধু দিবসই পালন হয়,মজুরি বাড়ে না। এমন অভিযোগ দিনমজুরদের। দিন রাত সমানতালে কাজ করে যেমন ফুসরত মিলে না ঠিক তেমনি বাড়ে না তাদের মজুরি। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে এখনো ন্যায্য মজুরি না পেয়ে তাদের টানাটানির সংসার। রংপুর নগরীর শ্রমিকদের এমন অবস্থা চোখে পরার মত।
রংপুর মহানগরী ঘুরে দেখা যায়, পথের চারিদিকে বিভিন্ন শ্রমিক ঘাম ঝড়া পরিশ্রম করছে। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও রোদে পুরে ঘাম ঝরালেও মজুরিতে রয়েছে বৈষম্য। পুরুষদের দৈনিক মজুরি ৫০০-৬০০ টাকা,সেখানে নারী শ্রমিক পাচ্ছেন ২৫০-৩০০ টাকা। মজুরিতে বৈষম্য জেনেও অভাবের সংসারে বাহি পা রেখেছেন এই নারীরা।
ছয়তলা বিল্ডিংয়ে ঢালাই কাজে ব্যস্ত নারী শ্রমিক জাবেদা বলেন, সারাদিন কাম করিয়া পাবো ৩০০ টাকা। কামের ফাঁকে চা,পা খায়া বাড়ি গেইতে গেইতে অর্ধেক টাকা ফুরি যায়। ঢালাইয়ের কাম হওছে পুরুষের সাথে হামরাও যোগালি দেই। বালু,সিমেন্ট, পাথার উবাই নিয়া মেশিনোত দেয়া কিন্তু তামার মজুরি ৫০০ টাকা। কি করমো এলা বাড়িত বসিয়া না খেয়া থাকার বদল যা পাই। ওইলা দিবস হামরা বুঝি না জানিও না। কামোত আসলে টাকা পাবো এটাই জানো।
কাজভেদে এখনো ন্যায্য শ্রমের মুজুরি পেয়ে থাকেন না এসব শ্রমিক। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, কেউ রোদে পুড়ে,কেউবা পোড়া মোবিল মাখা হাতে কাজ করছেন পেটের তাগিদে।
লেদের কাজে ব্যস্ত থাকা শ্রমিক বলছেন, গরীব মানুষের আবার শ্রমিক দিবস। একদিন কাম না করলে পেটে ভাত যায় না। শুধু দিবসই পালন হয় আমাদের ন্যায্য মজুরি নিয়ক কোন পদক্ষেপ নাই। কাকে বলবো দুঃখের কথা, প্রতিবছর এভাবেই যায় মজুরি বাড়ে না।
একদিন কাজ না করলে সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদের। তারা বোঝে না শ্রমিক দিবস। বাদ্যযন্ত্রের কারখানায় কর্মরত শ্রমিক প্রদীপ কুমার বলেন,শ্রমিক দিবস হামাক ভাত দেয় না, মজুরিও দেয় না। জিনিসপত্রের দাম বেশি এই মজুরিতে পোষায় না।
এদিকে শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি দিতে পুষিয়ে ওঠা ব্যবসায় কঠিন বলে মনে করেন মালিকরা।
রংপুর জি এল রায় রোড সংলগ্ন লেদ মালিক কোরবান আলী বলেন,লেদের সবকিছুর দাম বেশি,এখন দোকান হইছে বেশি। আমাদের কাজ কমে গেছে। আমরাও চাই শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে কিন্তু পোষায় না।
পরিবার পরিজনের মুখের দিকে তাকিয়ে অভাবের জীবন যুদ্ধে অনবরত সংগ্রাম করে ছুটে চলছেন এই শ্রমিকরা৷ তাদের ঘাম ঝরা পরিশ্রমে গড়ে উঠছে অট্টালিকা,শিল্পকারখানা, উন্নত হচ্ছে দেশ তবে আজও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত এই অসহায় শ্রমিকরা।