NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, মে ১৫, ২০২৫ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
পৃথিবীর ভবিষ্যৎ আমাদের প্রত্যেকের হাতে: প্রধান উপদেষ্টা সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা ট্রাম্পের দিল্লি ক্যাপিটালসে ডাক পেলেন মোস্তাফিজ লন্ডনের মঞ্চে ‘ডিডিএলজে’, চমকে দিলেন শাহরুখ খান জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি পুরোপুরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার -প্রেস সচিব শিগগিরই মিসরের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সৌদি আরবের সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতের হামলায় ১১ সেনা নিহত, আহত ৭৮: পাকিস্তান আইএসপিআর কেন দাম কমে গেছে সুপারস্টার নয়নতারার পর্দা নামলো সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগের, বিজয়ী গিগাবাইট টাইটানস
Logo
logo

দুর্নীতি ও অপচয় রোধে প্রাণিসম্পদের ১০৭৩ কোটি টাকার কাজ বাতিল


খবর   প্রকাশিত:  ০২ অক্টোবর, ২০২৪, ০৪:৩৬ পিএম

দুর্নীতি ও অপচয় রোধে প্রাণিসম্পদের ১০৭৩ কোটি টাকার কাজ বাতিল

দুর্নীতি ও অপচয় কমাতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) বিভিন্ন খাতে এক হাজার ৭৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭২ হাজার টাকার কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। দুই-আড়াই বছর ধরে দেশে ডলারসংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ডলারের এই সংকটে সরকারিভাবে বিদেশভ্রমণ নিরুৎসাহ করছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। প্রকল্পের টাকায় দুর্নীতি ও অপচয়ের অন্যতম মাধ্যম বিদেশভ্রমণ।

 

 

এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতি ও অপচয় কমাতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশভ্রমণও বাতিল করা হয়েছে। বিদেশভ্রমণের নামে প্রশিক্ষণ ও স্টাডি ভিজিট বাবদ এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০ কোটি ৪৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। আবার প্রকল্পের টাকায় সবচেয়ে বেশি কারচুপি হয় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ বা প্রভাব মূল্যায়ন কাজে। নিজেদের কোনো একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য কপি করে নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

 

এলডিডিপি প্রকল্পেও বিভিন্ন নামে এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। মনিটরিং অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট (এমইএসআই) স্টাডি, ফার্ম প্রসেস মনিটরিং, ফার্ম ফিজিবিলিটি স্টাডি বাবদ রাখা ১৮ কোটি টাকা বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন এলডিডিপি প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য প্রাণিসম্পদ খাতে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, পশু-পাখির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং খামারিদের ভাগ্যোন্নয়ন। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় চার হাজার ২৮০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।

 


 

এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা প্রায় তিন হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কিন্তু শুরু থেকে এই প্রকল্প একের পর এক দুর্নীতিতে জর্জরিত। ফলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর উপদেষ্টা ফরিদা আখতার প্রকল্পটির ওপর নজর রাখছিলেন। সম্প্রতি এক বৈঠকে প্রকল্পটির এক হাজার ৭৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭২ হাজার টাকার কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হয়েছিল এই অর্থের পুরোটাই দুর্নীতি কিংবা অপচয় করা হতো।

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুটি ধাপে এই প্রকল্পের কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে। প্রকল্পের যেসব কার্যক্রম বাতিল করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ ভবন (সাততলা) ১৫ কোটি টাকা, সাভারে ডেইরি উন্নয়ন ভবন (সাততলা) ২০ কোটি টাকা, তিনটি মেট্রো স্লটার হাউস (রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম) ২৯৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা, তিনটি জেলা কসাইখানা ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, পাঁচটি কাঁচাবাজার (ওয়েট মার্কেট) ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এ ছাড়া ম্যাচিং গ্রান্ট : ডেইরি হাব স্থাপন (পাঁচটি) ১০ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, ম্যাচিং গ্রান্ট : টিএমআর (১৮০টি) সাত কোটি ৪৭ লাখ টাকা, ম্যাচিং গ্রান্ট : স্মল স্কেল ফিড মিলার (১১০টি) দুই কোটি সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্যাকেজ জিডি : ২৩ (ট্রলি, বেলচা ও অন্যান্য হাইজেনিক টুলস) ৭৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

অন্যদিকে প্যাকেজ জিডি : ৩১ (ট্রলি, বেলচা ও অন্যান্য হাইজেনিক টুলস) ৭৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা, প্যাকেজ জিডি : ৩২ (ট্রলি, বেলচা ও অন্যান্য হাইজেনিক টুলস) ৭৬ কোটি ৪৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, প্যাকেজ জিডি : ০৭ (কাপপেন, ফ্যান ইত্যাদি) ৩৫ কোটি টাকা, প্যাকেজ জিডি-৯৭ (হাইজেনিক টুলস) ৯১ কোটি টাকা, প্যাকেজ জিডি : ২৪ (কাপপেন, ফ্যান ইত্যাদি) ৩৫ কোটি ১৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা, প্যাকেজ জিডি-৯৬ (ইনকিউবেটর) ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, প্রাইস কন্টিনজেন্সি ১১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা, ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি ৮৫ কোটি টাকা। এই একটি প্যাকেজের মাধ্যমে এক হাজার আট কোটি ৩১ লাখ ৪৪ হাজার টাকার কাজ বাতিল করা হয়েছে।

অন্যদিকে লাইভস্টক প্রদর্শনী ১২ কোটি ৯৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা, ডেইরি আইকন ৯৬ লাখ টাকা, বিদেশভ্রমণ (প্রশিক্ষণ, স্টাডি ভিজিট) ৩০ কোটি ৪৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, মনিটরিং অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট (এমইএসআই) স্টাডি এক কোটি ৬৬ লাখ টাকা, ফার্ম : প্রসেস মনিটরিং আট কোটি ৩০ লাখ টাকা, ফার্ম : ফিজিবিলিটি স্টাডি চার কোটি ৯৮ লাখ টাকা, স্কুল মিল্ক প্রগ্রাম ইভ্যালুয়েশন দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা, নলেজ প্ল্যাটফরম এক কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২০ : কেমিক্যাল রি-এজেন্ট দুই কোটি আট লাখ আট হাজার টাকা।

এই প্যাকেজে সব মিলিয়ে ৬৫ কোটি ২৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা বাতিল করা হয়েছে। এই দুই প্যাকেজে মোট এক হাজার ৭৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা বাতিল করা হয়েছে।