NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় নিরলস কাজ করছে সরকার - আদিলুর রহমান জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ বাংলাদেশের ট্রাম্পের ১০০ দিন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে বদলে যাচ্ছে বিশ্বব্যবস্থা ট্রাম্পের হুমকিতে কখনোই নতি স্বীকার করবে না কানাডা সেই কনস্টেবল পেলেন পিপিএম পদক, দেখা করলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজারবাইজানকে বিনিয়োগের পাশাপাশি মানবসম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান ‘তারা এখন আমাকে সম্মান করেন’—বেজোস ও জাকারবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্প বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক ‘কিং’ শাহরুখের রানি দীপিকা, জমবে কি পুরনো ম্যাজিক
Logo
logo

লক্ষ্মীপুরে কৃষি জমি কমায় শঙ্কায় কৃষক!


খবর   প্রকাশিত:  ০২ জানুয়ারী, ২০২৪, ১১:৪২ এএম

লক্ষ্মীপুরে কৃষি জমি কমায় শঙ্কায় কৃষক!

 

 

অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুরঃ লক্ষ্মীপুরে একদিকে নদী ভাঙ্গন অন্যদিকে আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠার কারণে দিনকে দিন ফসলি জমি কমে যাওয়ায় কৃষক সংখ্যার মধ্যে পড়েছেন। তারা কৃষি জমির অভাবে তোরই তরকারি ধান পাট সয়াবিন ভুট্টা গম এমন কি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করতে পারছেন না। ধার দেনা করে ফসল করলে নদী ভাঙ্গনে তাবলিন হয়ে যায়। এজন্য অনেকেই কৃষি আবার থেকে সরে এসেছেন।

 

 লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর কমলনগর রামগতি ও চন্দ্রগঞ্জ উপজেলায় মাছ চাষের নামে প্রতি বছর অসংখ্য পুকুর-দিঘি খনন, নতুন ইটভাটা স্থাপন, ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করাসহ নদী ভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত কমতে শুরু কৃষি জমি। যার ফলে অচিরেই বেকার হয়ে পড়বে অসংখ্য কৃষি শ্রমিক। এছাড়া ফসলি জমিতে পরিকল্পনাহীন গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে বিপুল পরিমাণ কৃষি জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। 

 

জেলা কৃষিসম্প্রসারণ দপ্তরের তথ্য অনুসারে, লক্ষ্মীপুর ৪২ টি কৃষি ব্লকে মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১৭৫১১ হেক্টর। এরমধ্যে এক ফসলী জমি ৬৯৯৩ হেক্টর. দুই ফসলি জমির পরিমাণ ৮৬২৮ হেক্টর, তিন ফসলি জমির পরিমাণ ২১৮১ হেক্টর, তিনের অধিক ফসলী জমি ২৫ হেক্টর, আবাদযোগ্য পতিত জমি ২৪৫ হেক্টর।

 

বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিছু চিহ্নিত মাটি ও বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া সারাবছর বিভিন্ন উপায়ে কৃষিজমি কিনে ব্যবসা করছে। ফলে প্রতিনিয়ত জমি কমছে। তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন, চরশাহী, দিঘলি, কুশাখালি ভবানীগঞ্জসহ চরমার্টিন ঘুরে জানা গেছে, মাটি ব্যবসায়ীদের কারণে বিগত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে এসব এলাকায় দ্রুত হারে কমছে ফসলি জমির পরিমাণ। এটাকে খাদ্য উৎপাদনের জন্য বড়  হুমকি বলে মনে করছেন তারা।

 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতি বছর প্রায় ৫০ থেকে ১শ বিঘা কৃষি জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে হারিয়ে গেছে অসংখ্য জলাভূমি ও সরকারী খাল। এসব ভরাট করে বসত বাড়ি নির্মাণসহ ভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইটভাটায় ইট তৈরির কাজে বছরে ১ হাজার ১৫শ’ বিঘা জমি কৃষিকাজের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে এই উপজেলাসমূহে। প্রতিবছর অবকাঠামোগত উন্নয়নের নামে তৈরি হচ্ছে, বসতবাড়ি  দালান, কাঁচাপাকা সড়ক, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, দীর্ঘ সেতু ইত্যাদির কারণেও কমছে ফসলি জমি।

 

লক্ষ্মীপুরে কৃষি জমির হ্রাস সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজনৈতিক এক নেতা বলেন, শুধু এ জেলাতেই নয় সারাদেশেই কৃষি জমির পরিমাণ দিনকে দিন কমছে। শুধুমাত্র গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নের কারণে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে তা কিন্তু নয়,  দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে উপার্জনমুখী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন প্রতিটি গ্রামে হাটবাজার ও স্কুল তৈরি হয়েছে। এছাড়া গ্রামের উন্নয়নে নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে এসব কারণেও জমির পরিমাণ কমছে। আবার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের নতুন ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। আগে যেখানে পায়ে হেঁটে চলতে হতো। এখন সেখানে সড়ক তৈরি হয়েছে। রাজধানীর সাথে সড়ক পথে বর্তমান সরকারের সময়ে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ফলে কিছু জমিতো কমতেই পারে।

 

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, বিগত সময়ে উপজেলার মাসিক সমন্বয় মিটিং এ মাটি উত্তোলন বন্ধ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতা চাওয়া হয়। আমরা কৃষি জমি রক্ষায় সরকারি আইন বাস্থবায়নে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

 

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন ফসলি জমি রক্ষার্থে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে খুব কম সময়ের মধ্যে কৃষি জমি চলে যাবে আবাসিক ও ইটভাটার দখলে। এতে করে ভূমি খেকো ও বালু উত্তোলনকারীদের রাজত্ব হলেও কৃষি খাতে নেমে আসবে বড় ধরনের বিপর্যয়। দ্রুত বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বাংলাদেশকে পড়তে হবে খাদ্য বিপর্যয়ের মুখে।