NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, বুধবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
সেই কনস্টেবল পেলেন পিপিএম পদক, দেখা করলেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজারবাইজানকে বিনিয়োগের পাশাপাশি মানবসম্পদ কাজে লাগানোর আহ্বান ‘তারা এখন আমাকে সম্মান করেন’—বেজোস ও জাকারবার্গ সম্পর্কে ট্রাম্প বাংলাদেশে ১০ বছরের লাইসেন্স পেল স্টারলিংক ‘কিং’ শাহরুখের রানি দীপিকা, জমবে কি পুরনো ম্যাজিক মানুষ ভালো সমাধান মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকারকেই-ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমরা জটিল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি : শিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের ১৬ ইউটিউব চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ, বিবিসিকেও সতর্কতা কানাডার নির্বাচনে ফের জয় পেয়েছে লিবারেল পার্টি ইরেশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় বাঁধনসহ তারকাদের প্রতিবাদ
Logo
logo

আজ থেকে রথযাত্রা শুরু, উলটো রথযাত্রা ৯ জুলাই


খবর   প্রকাশিত:  ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৬:২৬ এএম

আজ থেকে রথযাত্রা শুরু, উলটো রথযাত্রা ৯ জুলাই

ঢাকা: রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,

ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।

পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,

মূর্তি ভাবে আমি দেব—হাসে অন্তর্যামী।’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এই পঙক্তিগুলোর সাথে কে না পরিচিত? বিশ্বকবি যে রথযাত্রার কথা কবিতায় লিখেছেন, সে রথযাত্রার রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। সে ইতিহাসে আছে কল্পকাহিনী আর পুরাণের মিশেল, আছে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর আচার-প্রথার বর্ণনা। সেসব ইতিহাস আর প্রথাসিদ্ধ ঘটনার বর্ণনা নিয়ে এই আয়োজন। ‘রথ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ অক্ষ, যুদ্ধযান বা কোনোপ্রকার যানবাহন অথবা চাকাযুক্ত ঘোড়ায় টানা হালকা যাত্রীবাহী গাড়ি। এই গাড়িতে দুটি বা চারটি চাকা থাকতে পারে। সাধারণত অভিজাত শ্রেণির ঘোড়ার গাড়িকে রথ বলা হয়। পৌরাণিক কাহিনীতে রথের ব্যবহার দেখা যায় যুদ্ধক্ষেত্রে। মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে সেনানায়করা রথে চড়ে নিজেরা যুদ্ধ করেছেন এবং সেনাবাহিনীকে পরিচালনা করেছেন।

তবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে রথ শব্দের অর্থ কিন্তু ভিন্ন। গুরুত্ব এবং শ্রদ্ধার দিক থেকেও বেশ উপরে। তাদের কাছে রথ একটি কাঠের তৈরি যান, যাতে চড়ে স্বয়ং ভগবান এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করেন। ভগবানের এই রথারোহণই ‘রথযাত্রা’ নামে পরিচিত। এই পবিত্র উৎসবটি প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট সময়ে উদযাপিত হয়ে থাকে। রথের নানা কাহিনী প্রচলিত রয়েছে, যেগুলোর সাথে জড়িয়ে আছে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের নাম। প্রথমেই জানিয়ে রাখি জগন্নাথ এবং বিষ্ণু, শ্রী কৃষ্ণেরই দুই রূপ। বলরাম বা বলভদ্র, শ্রী কৃষ্ণ বা জগন্নাথ এবং সুভদ্রাদেবী এই তিনজন একে অপরের ভাইবোন। পুরাণে এমনটা বর্ণিত যে, তাদের তিন ভাইবোনের ঘনিষ্ঠ এবং স্নেহপরায়ণ সম্পর্কের জন্যই তাঁরা পূজনীয়। রথযাত্রাও তাদেরকে কেন্দ্র করেই।

আজ শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রা শুরু হয়েছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে রথযাত্রা উৎসব সীমিত পরিসরে উদযাপিত হয়েছিল। এবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হবে এই উৎসবটি, যদিও দেশে সম্প্রতি করোনা ভারইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।

সাকাল থেকেই জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) ঢাকার অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। ইসকনের স্বামীবাগ আশ্রম মন্দির প্রাঙ্গণে সকাল ১১টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ ও দুপুর ১টায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে বিকেল ৩টায় রথটান শুরু হবে।

রথটানের মিছিল ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গণে গিয়ে শেষ হবে। সেখান থেকে ৯ জুলাই (শনিবার) উলটো রথযাত্রা শুরু হয়ে ইসকনের স্বামীবাগ আশ্রম মন্দিরে শেষ হবে।

এদিকে ধামরাইয়ের উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত হবে যশোমাধবের রথযাত্রা। এ ছাড়া পুরনো ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথটান অনুষ্ঠিত হবে।

রথযাত্রা বিভিন্ন নামে পরিচিত। পুরী জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার প্রচলন হয়। বাংলাদেশেও রথযাত্রা হিন্দুদের একটি পবিত্র উৎসব। ঢাকার ধামরাইয়ে এটি পরিচিত যশোমাধবের রথযাত্রা নামে। গাজীপুরের জয়দেবপুরে মাণিক্যমাধবের রথযাত্রা। ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে যশোমাধবের রথযাত্রা ও মহেশের জগন্নাথদেবের রথযাত্রাও উপমহাদেশ বিখ্যাত। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রথযাত্রার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।

রথযাত্রা উপলক্ষে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয় ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জেএল ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মনীন্দ্র কুমার নাথ, সহ-সভাপতি নির্মল কুমার চ্যাটার্জী এবং সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।