আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি বিশাল ‘জাতীয় উদ্যান’ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা তৈরি করেছেন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী নেতারা। সোমবার (১৩ জুন) ইসরায়েলি গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে যে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে এ ‘জাতীয় উদ্যান’ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
‘দ্য ইসরায়েল হায়োম’ নামের একটি পত্রিকা জানিয়েছে, ইসরায়েলের ইহুদি বসতি স্থাপনকারী নেতাদের পরিকল্পিত এ জাতীয় উদ্যানটি জেরুসালেম ও মৃত সাগরের মধ্যে প্রসারিত হবে। এরপর তা অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের চারপাশের বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি বসতির মধ্যে প্রসারিত হবে। শেষ পর্যন্ত উদ্যানটি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশগুলোকে পৃথক করে ফেলবে। ইসরায়েলি পত্রিকাটি জানিয়েছে, উদ্যানটি প্রায় এক মিলিয়ন ডেনিম বা ২৪৭,০০০ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে।
অপরদিকে অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সকে ইসরায়েলিরা একটি ইহুদি সিনাগগে পরিণত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী। তার অভিযোগ এ ইহুদি রাষ্ট্রটি দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তুর্কি গণমাধ্যম ইয়েনি শাফাক তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ বলেছেন যে জেরুসালেমে ৫৫ বছর ধরে খননকাজ করেও একটি ইহুদি মন্দির বা সিনাগগের (সিনাগগ মানে হলো ইহুদিদের ধর্মীয় উপাসনালয়) কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি ইসরায়েল। তারপরেও তারা আল-আকসা মসজিদকে একটি ইহুদি সিনাগগে পরিণত করতে চাইছে।
তিনি বলেন, জেরুসালেমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায় ফিলিস্তিনিরা। আর এ ধরনের নিয়ম-রীতি ফিলিস্তিনের অটোমান শাসনামল থেকে বিরাজমান ছিল। মূলত এর মাধ্যমে তিনি বলতে চাইছেন যে আল-আকসা মসজিদ সব সময়ই একটি মুসলিম তীর্থস্থান ছিল। এখানকার নিয়ম-রীতি চলমান থাকুক। যারা ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করেছেন তাদের ধন্যবাদও দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। জেরুসালেমের প্রতি সম্মিলিত দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকল দেশকে, বিশেষ করে জর্ডান ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র স্থান এবং প্রথম কেবলা। ইহুদিরা একে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে অভিহিত করে থাকে। তাদের দাবি, প্রাচীনকালে এখানে দু’টি ইহুদি মন্দির ছিল। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুসালেম ও আল-আকসা মসজিদ দখল করে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ১৯৮০ সালে দেশটি সমগ্র শহরটিকে দখল করে। তবে তাদের এ দখলদারিত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক স্বীকৃতি পায়নি।
এছাড়া ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ধারণা অনুসারে, দখলকৃত পশ্চিম তীরে প্রায় ৬৬০,০০০ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী তাদের ১৪৫ বসতি ও ১৪০ ফাঁড়িতে অবস্থান করছেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, অধিকৃত অঞ্চলে নির্মিত সমস্ত ইহুদি বসতি অবৈধ।