গত কয়েক মাসের নজিরবিহীন রাজনৈতিক অস্থিরতার পর মঙ্গলবার (৩ জুন) দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত এই নির্বাচন ঘিরে দেশজুড়ে বিরাজ করছে টানটান উত্তেজনা।

সবকিছুর সূচনা হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে, যখন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মধ্যরাতের এক টেলিভিশন ভাষণে জরুরি সামরিক আইন জারি করেন। জাতীয় সংসদ ঘেরাও করে সেনাবাহিনী, আইনপ্রণেতাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং কয়েকদিনের মধ্যে ইউনের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

 

চূড়ান্তভাবে চলতি বছরের ৪ এপ্রিল দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক আদালত ইউনের অভিশংসন অনুমোদন করে ও তাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই ঘোষণা করা হয় ৩ জুন, দেশটিতে আকস্মিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এই নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির লি জায়ে-মিয়ং প্রবল এগিয়ে রয়েছেন বলে পূর্বাভাস। ২০২২ সালের নির্বাচনে এই লি-ই ইউনের কাছে সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন।

 

নতুন প্রেসিডেন্টের সামনে থাকবে একাধিক জটিল চ্যালেঞ্জ। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপড়েন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উত্তেজনা এবং দেশে জন্মহারের ক্রমাগত হ্রাস।

প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারকালে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ও জাতীয় নিরাপত্তা ঘিরে। সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতা কোরিয়ান সমাজে গভীর বিভাজন সৃষ্টি করেছে, যার প্রতিফলন দেখা গেছে বিরাট আকারের বিক্ষোভে—কখনও ইউনের পক্ষে, কখনও তার বিরুদ্ধে।

দেশটির নাগরিকদের জন্য আজকের ভোট শুধু একজন নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার সুযোগ নয়, বরং গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আশার দিন। দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ এখন নতুন নেতৃত্ব দেশকে কোন পথে নিয়ে যায়, সেটি দেখার অপেক্ষায়।