পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে সাংজানি এলাকায় গতকাল রবিবার বিশাল সমাবেশ করেছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইসনাফ (পিটিআই)। দেশের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হন বলে দলটির এক্স হ্যান্ডেলে বলা হয়েছে।
সমাবেশে পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, দলের নেতাকর্মীরা আজ দেশে আইনের শাসন এবং সংবিধানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জড়ো হয়েছেন।
গত বছরের আগস্ট থেকে আটক রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর মুক্তির জন্য সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যেই দলটি গতকাল সমাবেশের আয়োজন করে।
অন্যদিকে সাইফার মামলা থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)। রাজধানী ইসলামাবাদে সমাবেশ করার জন্য কয়েক মাস ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল পিটিআই। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে অনুমতি পায়নি দলটি। পরে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে দলটি এ বছরের মার্চ মাসে সমাবেশের অনুমতির জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) দ্বারস্থ হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে পিটিআই একটি প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল।
কিন্তু জেলা প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় তা স্থগিত করা হয়। এরপর ২২ আগস্ট সমাবেশের প্রস্তুতি নেয় পিটিআই। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রশাসনের তরফ থেকে সমাবেশের জন্য অনাপত্তিপত্র প্রত্যাহার করে গতকাল সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর খান জানান, আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক শেষেই গতকালের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সমাবেশস্থলের কাছে বিস্ফোরক উদ্ধার
সাংজানি এলাকায় পিটিআইয়ের সমাবেশস্থলের কাছ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ব্যাগটি থেকে একটি হ্যান্ডগ্রেনেট, ডেটোনেটর, বৈদ্যুতিক তার এবং অন্য বিস্ফোরকসামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইসলামাবাদে রেড অ্যালার্ট
পিটিআইয়ের সমাবেশ ঘিরে নাশকতার শঙ্কায় গতকাল ইসলামাবাদে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। গোয়েন্দা তথ্যে ‘মধ্যমস্তরের’ হামলায় সতর্কতা থাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজধানীর বেশির ভাগ প্রবেশ পথ। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সময় পূর্ণাঙ্গ সাজে সজ্জিত থাকার ও মোবাইল ফোন ব্যবহার না করার বিষয়টি নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য রাজধানীতে যানবাহন চলাচল সীমিত করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে কনটেইনার স্থাপন করা হয়েছে। রেড জোনে যাওয়ার সব রুট কনটেইনার দিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে। শুধু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরই রেড জোনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।