২০০২ সাল। পর্তুগালের ক্লাব ফুটবল ক্লাব স্পোর্টিং সিপির হয়ে ম্যাচের ৫৮ মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন অখ্যাত ১৭ বছর বয়সের এক কিশোর। প্রথম সেই অফিসিয়াল ম্যাচের ক্রমেই পায়ের জাদু দেখিয়ে পরিচিতি পেতে লাগলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নামে। একের পর এক গোল করে উপনাম পেলেন 'গোলমেশিন'। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন ফুটবল বিশ্বের উজ্জ্বল তারকা।
রোনালদোর বয়স এখন ৩৯। তবে ফুটবলের প্রতি আবেগ এখনো কমেনি বিন্দুমাত্র; বরং বেড়েছে। এখনো খেলে যাচ্ছেন, গোল করছেন আর উদযাপন করছেন। অন্যের দৃষ্টিতে বয়স অনেক হলেও, সে ভাবনায় মন নেই রোনালদোর। খেলে যান আরও অনেক বছর। লড়াই করে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে চান; যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন।
নিজের বয়সের দিকেও তাকাতে চাচ্ছেন না রোনালদো। 'বৃদ্ধ' বয়সেও খেলা চালিয়ে যান সেরা ক্লাবে। থাকতে চান লাইমলাইটে। গতকাল বুধবার একটি পডকাস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটিই জানিয়েছেন রোনালদো।
রোনালদো বলেন, ‘এই বয়সে আমি গর্ববোধ করি এবং এখনও সর্বোচ্চ স্তরের খেলায় প্রতিযোগিতা করি। এটি দুর্দান্ত এবং এটি আমাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। আপনি যদি আমার ক্যারিয়ারের গত ২০ বছরের দিকে তাকান, দেখবেন আমার স্তরটি উচ্চতর। আপনি যদি ২০ বছর ধরে শীর্ষে থাকেন তবে এটি অবিশ্বাস্য। আমি সেটা করি এবং সেটাই চালিয়ে যাচ্ছি। আমার জন্য এটা একটা বড় অর্জন।’
পর্তুগিজ তারকা আরও বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হলো সামনে এগিয়ে যাওয়া। এই স্তরে (সেরা স্তর) থাকা সহজ নয়। এখনও সামনে এগিয়ে যাওয়া, অনুপ্রাণিত হওয়া, গোল করা, ফিটনেস ঠিক রাখা, যে উদ্দীপ্ত তরুণরা আসছে তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এবং তারা যখন আমার বিরুদ্ধে খেলবে তখন তারা আমাকে দেখাতে চায় যে, তারা আমার চেয়ে শক্তিশালী ও গতিশীল। এ সময় আপনাকে শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও প্রস্তুত করতে হবে।’
ফুটবল ক্যারিয়ারে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লা লিগার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ, ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাস ও সর্বশেষ সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল নাসরের হয়ে খেলছেন রোনালদো।
ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে ৮৯১ গোল করেছেন রোনালদো। আর আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা পর্তুগিজের এই তারকার গোলের সংখ্যা ১২৮টি। এছাড়া ৫বার ব্যালন ডি'অর জিতেছেন রোনালদো।
আন নাসর তারকা বলেন, ‘কাজ ছাড়া মেধা কিছুই নয় এবং মেধা ছাড়া কাজ কিছুই নয়। মেধা ও পরিশ্রম একই সময়ে কাজে লাগাতে হবে। আমার উভয়ই আছে। আমি বলতে পারি না যে, আমার কাছে দুটির কোনোটিতে কমবেশি আছে।’
সাবেক ম্যানইউ তারকা বলেন, ‘ছোট জিনিসগুলোই বড় পার্থক্য তৈরি করবে। ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই সবচেয়ে কঠিন জিনিস।’
নিজের ফিটনেসের বিষয়ে রোনালদো বলেন, ‘আমি মাঝে মাঝে আমার মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি। আমরা সবাই মানুষ। অবশ্যই আমি নিজেও প্রতিদিন জিমে যেতে পছন্দ করি না। এটা কেউ করে না। তবে আপনাকে এটি করতে হবে।’