মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম এসকেন্দার খাঁ (৭০)। তিনি কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাটবালী গ্রামের আমির হোসেন খাঁর ছেলে।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এসকেন্দার।
নিহত এসকেন্দার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সদস্য। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের অনুসারী ছিলেন।
এসকেন্দারের স্বজনদের অভিযোগ, মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের অনুসারীরা আজ সকালে তাঁকে কুপিয়ে আহত করে। শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিলে দুপুর ১টায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক মিরাজ মোল্লা জানান, নিহত এসকেন্দারের সুরতহাল করা হয়েছে। তাঁর দুই পায়ে ও বাঁ হাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ৭টার দিকে বাড়ির সামনের রাস্তায় হাঁটতে বের হন এসকেন্দার খাঁ। এ সময় মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের সমর্থক ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক বেপারীর লোকজন তাঁর ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা এসকেন্দার খাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। তাঁর পায়ের রগও কেটে ফেলা হয়। বাধা দিতে এলে আরেকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।
এসকেন্দারের ছেলে মিলন জানান, আজ সকাল ৬টায় তাঁর বাবা মাছ বিক্রি করার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এ সময় পথরোধ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুস সোবাহান গোলাপের অনুসারীরা তাঁকে উপর্যুপরি কুপিয়ে আহত করে।
মিলন বলেন, ‘আমার বাবা স্বতন্ত্র প্রার্থী তহমিনা বেগমের সমর্থক ছিলেন। সে জন্য তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। আমরা খবর পেয়ে তাঁকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।’
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন গেন্দু কাজী বলেন, ‘আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী এসকেন্দার খাঁ সকালে তাঁর বাড়ির সামনে হাঁটতে বের হলে হঠাৎ নৌকার সমর্থক ফজলুল হক বেপারীর লোকজন তাঁকে কুপিয়ে জখম করে। পরে তিনি বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক বেপারীকে একাধিকবার কল করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মাদারীপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগম বলেন, ‘আমার এক কর্মীকে নৌকার পক্ষের লোকজন কুপিয়ে হত্যা করেছে। আসলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াতে তারা এগুলো করছে।’
কালকিনি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মারগুব তৌহিদ বলেন, ‘গ্রাম্য দলাদলি ও রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে সকাল ৭টার দিকে এসকেন্দার খাঁ বাড়ি থেকে বের হলে তাঁকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়ে জখম করে। পরে তাঁকে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’
মো. মারগুব তৌহিদ আরো বলেন, ঘটনাস্থলে উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।