সত্য গোপন করে বলিউড তারকা নোরা ফাতেহিকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মাসিক বিজনেস ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ‘মিরর’ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও প্রকাশক শাহাজাহান ভূঁইয়া রাজু।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ জানান তিনি।
শাহাজাহান ভূঁইয়া রাজু বলেন, আপনারা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন নোরা ফাতেহির বাংলাদেশে আগমণের অনুমতি ছিল ডকুমেন্টারি শুটিংয়ের। উইমেন লিডারশিপ করপোরেশনের সভাপতি ইশরাত জাহান মারিয়া সত্য গোপন করে ডকুমেন্টারি শুটিংয়ের আড়ালে বাণিজ্যিক লাভের উদ্দেশ্যে বিনা অনুমতিতে উচ্চমূল্যে টিকেট বিক্রয় এবং অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামের আয়োজন করে। যা নিয়ে ইতোমধ্যে সমলোচনা চলছে। আইনের ব্যত্যয় মিরর গ্রুপ না তিনিই করেছেন।
তিনি বলেন, উইমেন লিডারশিপ করপোরেশনের সভাপতি ইশরাত জাহান মারিয়া ১৬ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১২টা ৪৫ মিনিটে আমাকে ফোন করে জানায় তার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক আমার পাওনা টাকা তিনি পরিশোধ করতে চান। আলাপচারিতায় তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টায় আমি আপনার অফিসে এসে টাকা দিয়ে যাবো। সকালে তিনি মোবাইলে ম্যাসেজ করে জানান, আমি নির্ধারিত সময়ে আসছি আপনি থাকেন। ওই সময়ে তিনি আসেননি, তবে সমসাময়িক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যারা এসে আমাকে জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আপনাকে আমাদের সঙ্গে ডিবি অফিসে যেতে হবে। ডিবি অফিসে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে ও বুঝতে পারি আমার নামে ইশরাত জাহান মারিয়া মামলা রুজু করেছেন। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
রাজু বলেন, প্রকৃত পক্ষে আমাকে আমার পাওনা টাকা অফিসে এসে দেওয়ার নাম করে অফিস থেকে ডিবি দিয়ে আটক করা এবং সড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা ছিল তার উদ্দেশ্য। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হিসেবে আইনি প্রক্রিয়ার গত ২০ নভেম্বর আমি জামিনে মুক্তি লাভ করি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার দেওয়া বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত। তিনি আমার ন্যায্য পাওনা পরিশোধ না করা এবং বিগত ২০ বছরের তিলে তিলে গড়া আমার ব্যবসায়িক সুনামের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং আমাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে নিজে খ্যাতি লাভের আশায় এমন অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সত্য কখনোই চাপা থাকবে না।
নোরা ফাতেহির বাংলাদেশে আগমন বিষয়ে মিরর প্রকাশক শাহাজাহান ভূঁইয়া রাজু বলেন, নোরা ফাতেহিকে নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর মিরর গ্রুপ একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা ছিল। এবিষয়ে নোরা ফাতেহির সঙ্গে অগ্রিম সম্মানি পরিশোধ সাপেক্ষে মিরর গ্রুপের চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেসময়ে দেশে বিদ্যমান ডলার সংকটের কারণ দেখিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তার আগমনের অনুমতি দেয়নি। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে মিরর গ্রুপ নোরা ফাতেহিকে নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে সরে আসে এবং পাওনা ফেরত চেয়ে নোরা ফাতেহিকে লিগ্যাল নোটিশ করে। মিরর গ্রুপের চুক্তি বহাল জেনেও ইশরাত জাহান মারিয়া ১৮ নভেম্বর নোরা ফাতেহিকে নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। লিগ্যাল নোটিশ ও আমাদের পাওনা বিষয়টি জানতে পেরে তিনি (ইশরাত জাহান মারিয়া) স্বেচ্ছায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং আমাদের পাওনা তিনি পরিশোধ করবেন বলে মিরর গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করে ৩টি চেক প্রদান করেন। চুক্তিপত্রে উভয়পক্ষের ৪ জন সাক্ষির সই ও উপস্থিতিতে সম্পাদিত হয়। চুক্তির শর্ত মতে আমরা লিগ্যাল নোটিশ প্রত্যাহার করে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে এডিসহ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠাই। চুক্তি মোতাবেক ইশরাত জাহান মারিয়া টাকা পরিশোধ না করে প্রতারণামূলকভাবে আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি এবং ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন।