‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্যে আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’। আজ বিকেল ৩টায় বইমেলার উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে সর্বোচ্চসংখ্যক ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ ঘুরে দেখা গেছে, মেলা আয়োজনের জোর প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ড. সরকার আমিন জানান, গতবারের মতোই অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে বইমেলার বিন্যাস। তবে এবার কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট চাটি প্রবেশ ও বাহির পথ থাকবে। খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা ঘেঁষে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে।
বইমেলার সময়সূচি
আজ থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বইমেলা। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
মেলায় যেন উসকানিমূলক বই না আসে
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ‘প্রতিবছর বইমেলায় কিছু লেখক বা প্রকাশনী উসকানিমূলক কিছু বই প্রকাশ করে। বাংলা একাডেমির কর্মকর্তাদের আমরা বলেছি, যেন কোনো ধরনের উসকানিমূলক বই এবারের মেলায় না আসে। তারা যেন বই স্ক্যানিং করে মেলায় পাঠায়।’
মাসব্যাপী একুশে বইমেলা ঘিরে গতকাল শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডিএমপির নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এবারের একুশে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে ধরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা প্রতিবারের মতো এবারও কন্ট্রোলরুম স্থাপন করেছি। এখানে সব সময় আমাদের কর্মকর্তারা থাকবেন। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাব্যবস্থা তদারকি করবেন রমনা থানার ডিসি। এ ছাড়া র্যাব, সিটিটিসি ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সহযোগিতা করবেন।’
তিনি বলেন, বইমেলা এলাকা সিসিটিভি দিয়ে নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে আনা হয়েছে। সিসিটিভির মাধ্যমে এলাকাটি তদারকি করা হবে। আজ (গতকাল) থেকে ম্যানুয়ালি মানুষের দেহতল্লাশি চলবে, কেউ যেন মাদক বা কোনো ধরনের বিস্ফোরক দ্রব্য সঙ্গে নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে না পারে। এ ছাড়া ডগ স্কোয়াড থাকবে।
মেলায় ট্রাফিক ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, পুরো মাস টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বরের ক্রসিংটি বন্ধ থাকবে। কেবল মেলা চলাকালে বন্ধ থাকবে। দর্শনার্থী যাঁরা আসবেন, তাঁরা দোয়েল চত্বর হয়ে তিন নেতার মাজারের সামনে পর্যন্ত আসতে পারবেন।
বইমেলা ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘সার্চলাইট বসানো হয়েছে, যেন কোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের নিরাপত্তা জোরদার থাকে। ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনো ভারী যান চলাচল করবে না।’
বইমেলার ভেতরে ফুডকোর্ট দেওয়া হয়েছে। ফুডকোর্টের দোকানগুলো যেন অতিরিক্ত দাম না নিতে পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নজদারির মধ্যে রাখার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, বইমেলা যেন বাণিজ্যমেলার মতো না হয়। বাণিজ্যমেলায় সব কিছুর তিন গুণ দাম রাখা হয়। এটি তো ঠিক নয়। পাঁচ টাকার একটি জিনিসের দাম ছয়-সাত টাকা হতে পারে, ১৫ টাকা নেওয়া অগ্রহণযোগ্য। সরকারের অনেক বিভাগ আছে, তারাও যেন তদারকি করে।