অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী উদ্যোগেও কমছে না সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি। হাত বদলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজরা। যার প্রভাব পড়ছে বাজারগুলোতে। হু হু করে বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এখন আবার আগের অবস্থায় চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট ফিরে এসেছে। শুধু ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতবদল হয়েছে।
কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছিল।
বগুড়ার মহাস্থান হাটে গতকাল সোমবার পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি শিম মানভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি শিম মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মহাস্থান হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও রাজধানী ঢাকার খুচরা বাজারে কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়ার মহাস্থান হাটের আড়তদার আয়নাল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে শীতের সব ধরনের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে এসেছে।’
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে নিয়মিত পণ্য নিয়ে ঢাকায় আসা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরবঙ্গ থেকে একটি মালবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানসহ অন্যান্য বড় যানবাহন ঢাকায় ঢুকলে একাধিক স্থানে চাঁদা দিতে হয়। আবার ঢাকায় ঢোকার পর সেই পরিবহনকেই আরো একাধিক স্থানে চাঁদা দিয়ে বিভিন্ন বাজার ও স্ট্যান্ডে যেতে হয়। প্রতিটি স্থানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা নেয় চাঁদাবাজরা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘নগরবাসীর সহযোগিতা ছাড়া আমরা কিছু করতে পারব না। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সমাজ থেকে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। আপনারা চাঁদা দেবেন না, যারা চাঁদা নিতে আসে তারা কিভাবে চাঁদা নেয় সেটা আমরা দেখব। চাঁদাবাজির জন্য নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি কাজ করছি, দ্রুতই আপনারা দেখতে পারবেন।’
বাজার সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজির বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান সম্প্রতি বলেন, ‘বাজার সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ বাড়ে। সমবায় পদ্ধতি এখনো দেশে চালু করা হয়নি। চার থেকে পাঁচ হাত বদলে দাম বাড়ছে পণ্যের। তবে সমবায় পদ্ধতি অবলম্বন করলে বাজারে এই অস্থিরতা থাকত না।’
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার চার মাস পার হয়েছে। পণ্যমূল্য ক্রেতাসাধারণের নাগালে আনতে এই সরকার এরই মধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স। তার পরও অসাধুরা থামছে না। বিক্রেতারা সরকারের সিদ্ধান্তকে একপ্রকার বৃদ্ধাঙ্গলি দেখাচ্ছে।