কোটা আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, আমি বড় ভাই হিসেবে আপনাদের বলছি, আপনারা আদালতের দিকে একটু দেখেন। এক মাস পরে যদি আপনাদের মনে হয়, না এটা যৌক্তিক সমাধান হয়নি, তাহলে আপনারা আবারও আন্দোলন করতে পারেন। আপনাদের পুরো ভবিষ্যৎটা সামনে, আমি চাই না অযথা মুখোমুখি হয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হোক এবং এই রাষ্ট্রে বা দেশে একটা বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হোক। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলে সরকারকে কঠিন হাতে আগাতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।
সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘আমি একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমি আপনাদেরকে দাবি জানাচ্ছি, আপনারা এক মাসের জন্য এপিলেট ডিভিশনের রেজাল্ট হওয়া পর্যন্ত এটাকে (আন্দোলন) স্থগিত করেন এর ভেতরে আমরা, আপনারা যদি চান আমরা আপনাদেরকে সাথে করে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসব।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা, উনাকে বললে উনি বুঝবেন না এমন কোনো জিনিস নেই।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে সুমন বলেন, ‘আপনারা বলতে চাচ্ছেন, আপনাদের আন্দোলন সরকারের সঙ্গে আদালতের সঙ্গে না কিন্তু আপনারা যা চান তা যদি আদালত থেকে আসে তাহলে তো আন্দোলন করার দরকার পড়ে না।
কোটা আন্দোলনকারীরা যদি আদালতে আসে তাহলে আপনি তাদের আইনি সহায়তা দেবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদি তারা আদালতে আসে আমি তাদের সাথে থেকে একজন আইনজীবী হিসেবে তাদের এই যৌক্তিক সংস্কারের জন্য যা যা বলা লাগে আমি তাদের পক্ষে বলব। কিন্তু এরপরেও সাধারণ মানুষের কষ্ট এবং এই রক্তাক্ত পরিবেশ আমরা দেখতে চাই না।’
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘প্রতিটা দল বা সংগঠনে সবসময় তো একই আদর্শের ওপর সব লোক থাকে না।
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমি বলছি না আন্দোলন একেবারে বন্ধ করে দেন। আমি বলছি, এই এক মাস আপনারা আদালতের সিদ্ধান্ত দেখেন। প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাই, গিয়ে উনার সঙ্গে কথা বলি। কারণ উনি তো শুধু প্রধানমন্ত্রী না, উনি বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। উনাকে বুঝিয়ে বললে এমন কিছু নেই হয় না। আপনারা জানেন আমাকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে বলেছিলাম, উনি তিন থেকে চার দিনের মধ্যে বাধ্য করেছেন যারা আমাকে হুমকি দিয়েছিল তাদের সবাইকে ধরতে।’
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘একজন এমপি হিসেবে আপনাদের কাছে আমি দাবি জানাচ্ছি, অযথা সন্ত্রাস-আন্দোলনের দিকে গিয়ে ভাঙাভাঙির দিকে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাদের কোনো সমাধান হয় না। ছাত্রলীগ এবং সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গতকাল যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই পরিস্থিতি যেকোনোভাবে বন্ধ করতে হবে। গতকাল যারা আহত হয়েছে আমি সরকারের কাছে দাবি জানাব, সবাইকে পরিপূর্ণভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে।’
আন্দোলনকারীদের কোন আচরণের কারণে মনে হচ্ছে যে এই আন্দোলনটা সরকারের বিরোধিতার দিকে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সুমন বলেন, ‘আন্দোলন যখন প্রথম হয়েছে যৌক্তিক সংস্কারের বিষয়ে আমরা নানা কথা শুনেছি তাদের এবং সরকারও যথেষ্ট পরিমাণ শোনার চেষ্টা করেছে। সরকার থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে এপিলেট ডিভিশনে নিয়ে আসা হয়েছে, যাতে এটির একটি যৌক্তিক সমাধান করা যায়। যখন থেকে রাজাকার স্লোগান দেবেন এটা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম বা আমরা যারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। জামায়াত-শিবির কিন্তু বসেই থাকে কিভাবে কোনো আন্দোলন থেকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়া যায়।’